ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

চেয়ারে শহীদদের পরিবার মেঝেতে ৫ উপদেষ্টা, শ্রদ্ধার নজির স্থাপন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ০১:১৩ এএম
ছবি- সংগৃহীত

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জে নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ। তবে উদ্বোধনী আয়োজনে দেখা গেছে এক ব্যতিক্রমী এবং আবেগঘন দৃশ্য মঞ্চের কেন্দ্রস্থলে বসেছিলেন শহীদদের মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা, আর ঠিক তাদের পায়ের নিচে মঞ্চের মেঝেতে বসেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন হয়। শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে এমন মানবিক ও বিনয়ী ভঙ্গিতে বসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন আয়োজকেরা।

উদ্বোধন শেষে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এই বিচার এ সরকারের আমলেই সম্পন্ন হবে।

শহীদ পরিবারের প্রতি সরাসরি আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের হৃদয়ে আজও প্রশ্ন এত বড় গণহত্যার বিচার হবে তো? আমি জোর গলায় বলতে চাই, এই জঘন্য, নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার অবশ্যই হবে।

অনুষ্ঠানে শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানান, দেশের বিভিন্ন জেলায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। গণভবনকে একটি ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘর’ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যা ৫ আগস্টের মধ্যেই উদ্বোধন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, শহীদদের প্রতিটি কবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সংগ্রামের এই পথ এখানেই শেষ নয়। এই দায়িত্ব আমরা আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। যেন বাংলাদেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও জনগণ তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে। আজ আমরা একত্র হয়েছি তাদের সেই বীরত্ব ও আত্মদানের ইতিহাস স্মরণ করতে।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জেই জুলাই আন্দোলনের সময় ৫৬ জন শহীদ হন, যাদের মধ্যে ২১ জন ছিলেন এই জেলার সন্তান। তাদের স্মরণে এই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।