সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মৃত্যুর তিন দিন পর কবর থেকে মরদেহ তুলে নিজ বাড়ির উঠানে পুনরায় দাফন করা হয়েছে আব্দুস সাত্তার (৬৫) নামের এক তরিকাপন্থি অনুসারীকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) মারা যান আব্দুস সাত্তার। পরিবারের সদস্যরা সেদিনই তাকে সোনামুখী জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে দাফন করেন। পরদিন শুক্রবার কুলখানি ও দোয়া মাহফিলও সম্পন্ন হয়। সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছিল।
কিন্তু রোববার (১৩ জুলাই) গভীর রাতে হঠাৎ মোড় নেয় ঘটনা। কে বা কারা রাতের আঁধারে কবর খুঁড়ে মরদেহ তুলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে দেখা যায়, মৃত ব্যক্তির বাড়ির উঠানে একটি নতুন কবর।
মরহুমের ভাতিজা জানান, ‘সকালে খবর পাই, বাড়ির উঠানে কবর খোঁড়া হয়েছে। পরে কবরস্থানে গিয়ে দেখি, চাচার কবর খালি। এরপর বাড়িতে ফিরে আসি। কে বা কারা এটা করেছে, জানা নেই।’
স্থানীয়দের মতে, আব্দুস সাত্তার একজন তরিকাপন্থি ব্যক্তি ছিলেন এবং জীবদ্দশায় নিজ বাড়ির উঠানেই দাফনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে পরিবারের সদস্যরা তা উপেক্ষা করে কবরস্থানে দাফন করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তার অনুসারীরা মরদেহ তুলে এনে ব্যক্তিগতভাবে সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নবীর উদ্দিন শেখ বলেন, ‘রাতে কবরস্থানের পাশে খোঁড়াখুঁড়ির শব্দ শুনে গিয়ে দেখি পাঁচজন পাঞ্জাবি পরা লোক কবর খুঁড়ছে। ধমক দিয়ে তারা আমাকে চলে যেতে বলে, আমি ভয়ে সরে আসি।’
ইউপি সদস্য ও কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘তরিকাপন্থিরা শুরু থেকেই বাড়িতে দাফনের পক্ষে ছিলেন। জানাজার সময়ও তারা আপত্তি জানিয়েছিলেন। ধারণা করছি, তারাই হয়তো মরদেহ তুলে পুনরায় দাফন করেছে। তবে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তরিকাপন্থি অনুসারীদের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন এবং কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দিতে চাননি।
এ বিষয়ে কাজিপুর থানার ওসি নূরে আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কবর থেকে মরদেহ তুলে বাড়িতে দাফনের বিষয়টি সত্য। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি।’