ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৫৪তম শাহাদতবার্ষিকী

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০৯:৫০ এএম
বীরশ্রেষ্ঠ মো. রুহুল আমিনের প্রতীকী ছবি।

আজ ১০ ডিসেম্বর। মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অমর বীর, বীরশ্রেষ্ঠ মো. রুহুল আমিনের ৫৪তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে খুলনার রূপসা নদীর তীরে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তিনি  শহীদ হন। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ৭ বীরশ্রেষ্ঠের অন্যতম বীর সেনানী।

রুহুল আমিনের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে (বর্তমানে সোনাইমুড়ি উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের বাঘপাঁচরা গ্রামে, যা বর্তমানে রুহুল আমিন নগর নামে পরিচিত) একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার পিতা আজহার পাটোয়ারী এবং মাতা জোলেখা খাতুন।

রুহুল আমিন প্রথমে নান্দিয়াপাড়ায় লুৎফুর রহমানের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি জেনারেল ওসমানীর নির্দেশে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে ভারতে যাওয়ার নির্দেশ পান। এপ্রিলে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পৌঁছান। ২নং সেক্টরে যোগ দেন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সেক্টরের অধীনে বহু স্থলযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের উদ্দেশ্যে রুহুল আমিন তখন নৌবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আগরতলায় একত্র হন। পরে কলকাতায় নৌ-সেক্টরে যোগ দেন।

তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনকল্পে ভারত সরকার থেকে পাওয়া উপহারের টাগবোট গানবোটে রূপান্তর করেন। এর একটির নাম ‘পদ্মা’ ও অপরটির নাম রাখা হয় ‘পলাশ’। রুহুল পলাশের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার আর্টিফিসার নিযুক্ত হন। ৬ ডিসেম্বর যশোর সেনানিবাস হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর কবলমুক্ত হয়। নৌপথে যুদ্ধ চলতে থাকে। 

একপর্যায়ে মোংলা বন্দর খালিশপুরের অধিনায়ক কৌশলগত কারণে হিরণ পয়েন্টে নিজেদের রণতরি ত্যাগ করতে বলা হয় নৌযোদ্ধাদের। কিন্তু রণতরি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ মেনে নিতে পারেননি রুহুল আমিন। তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় শত্রু বিমানের গোলা এসে পলাশের ইঞ্জিনরুমে পড়ে আগুন ধরে যায়। তার ডান হাত উড়ে যায়। তিনি নদীতে ঝাঁপ দেন। হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকাররা তাকে ধরে ফেলে। অমানুষিক নির্যাতন চালালে শহীদ হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

স্বাধীনতাযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাসখানেকের মাথায় জানা যায়, রুহুল আমিন খুলনার হিরণ পয়েন্টে শত্রু বাহিনীর অতর্কিত বিমান হামলায় রণতরি বিধ্বস্ত হয়ে শহীদ হন। তার লাশ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, খালিশপুরেই তাকে দাফন করা হয়েছে।