ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

পরীক্ষার হল পরিদর্শনে ছাত্রদল নেতা

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
নাটোরের বড়াইগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে বনপাড়া পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব সরদার।

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুসারে পরীক্ষা কেন্দ্রের ১০০ গজ আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা। কিন্তু নিয়ম যেন ‘মামার হাতের মোয়া’ নাটোরের বনপাড়া পৌর ছাত্রদল নেতা রাকিব সরদারের কাছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢুকে পড়েন পরীক্ষার কেন্দ্রে। শুধু কি কেন্দ্র, যথারীতি হল পরিদর্শন করেন ছাত্রদলের এই শাখা যুগ্ম আহ্বায়ক।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কলেজে অনুষ্ঠিত ঘটেছে এই ঘটনা। পরীক্ষার হলে তার অনধিকার প্রবেশের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় পড়েছে গোটা জেলায়। পরীক্ষা কেন্দ্র ছাত্রদল নেতার অনধিকার প্রবেশ নিয়ে প্রশ্নের মুখেও পড়েছেন দায়িত্বরত শিক্ষকরা।

ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। তারা বলছেন, পরীক্ষার হলে রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো নিয়ম ভেঙে প্রবেশ করা স্পষ্ট অন্যায়। দলীয় প্রভাবে যে পরীক্ষায় অনিয়ম হচ্ছে না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা।

জানা যায়, যথাসময়ে বনপাড়া কলেজে পরীক্ষা শুরু হয়। এর প্রায় ৪০ মিনিটের মাথায় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস। সেসময় অবধি নতুন কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করেনি বলে জানা গেছে।

পরীক্ষা শুরু প্রায় এক ঘণ্টা পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব সরদার। পরে তিনি পরীক্ষার হলেও যান। যার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

অভিভাবকরা বলছেন, এমন ঘটনার মাধ্যমে পরীক্ষার পরিবেশ ও শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন সচেতন অভিভাবকরা।

তবে অভিযুক্ত রাকিব সরদারের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে বনপাড়া কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। সে সময় কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী, কক্ষ পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘তবে পরে জানতে পারি, রাকিব সরদার একজন পরীক্ষার্থীর আসন দেখিয়ে দিতে তার সঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করেন। বিষয়টি তদন্ত করে কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৪৪ ধারা ভঙ্গের বিষয়ে থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

এদিকে, বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের প্রক্রিয়া চলমান।