নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগরে শ্রী-শ্রী মদনমোহন মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে ১৫৫ বছরের প্রাচীন পিতলের রথে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে হাজারো ভক্তের অংশগ্রহণে রথযাত্রার শুভ সূচনা হয়।
এ রথটি স্থানীয়ভাবে ‘উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম পিতলের রথ’ হিসেবে পরিচিত। এটির উচ্চতা ২৫ ফুট, ভিত্তি ১২ ফুট স্কয়ার এবং এতে রয়েছে ১২টি চাকা, প্রতিটি চাকার ভেতরে পিতলের ১২টি পাত, ১২টি কোণ এবং ১১২টি পিলার- যা একে করে তোলে এক ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় রথযাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। মাধনগর মদনমোহন মন্দির থেকে রশি টেনে রথ এগিয়ে নিয়ে যান ভক্তরা। এ সময় নেচে গেয়ে, ঢাক-ঢোলের শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এ অনুষ্ঠানে শুধু নাটোর নয়, পাশ্ববর্তী পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হাজারো পূণ্যার্থী এতে অংশ নেন।
এ অনুষ্ঠানের নয়দিন পর অনুষ্ঠিত হবে ‘উল্টো রথ’। সেই রথযাত্রার মাধ্যমেই মদনমোহন মন্দিরে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হবে জগন্নাথদেবকে।
পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার অধিকারী বলেন, ‘রথটি ১৮৬৭ সালে পাবনার দিলালার জমিদার যামিনী সুন্দরী বসাক প্রতিষ্ঠা করেন। রথ শুধু ধর্মীয় ঐতিহ্যের নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এই যাত্রা মানুষের মঙ্গল, মুক্তি ও শান্তি কামনার প্রতীক হয়ে ওঠে।’
এদিকে রথের মালিকানাধীন প্রায় শতাধিক বিঘা দেবোত্তর জমি বিভিন্ন সময়ে বিক্রি ও হাতবদলের মাধ্যমে বেদখল হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে মন্দির কমিটির সভাপতি পিন্টু অধিকারী বলেন, ‘মূল্যবান এই জমিগুলো উদ্ধার করে রথ এবং মন্দিরের সেবা-কার্যক্রমের জন্য সংরক্ষণ করাই এখন আমাদের প্রধান দাবি।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা বলেন, এই জমিগুলো রথের রক্ষণাবেক্ষণ ও ধর্মীয় কার্যক্রমে সহায়তার জন্য নির্ধারিত থাকলেও বর্তমানে বেসরকারি মালিকানায় চলে যাওয়ায় রথের ঐতিহ্য রক্ষায় সংকট দেখা দিয়েছে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন