ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

চার মাস স্কুলে যাননি শিক্ষক, তবু নিয়মিত বেতন উত্তোলন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

নাটোরের লালপুরে সরকারি বিধি উপেক্ষা করে এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীর্ঘ চার মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত সরকারি বেতন তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক উত্তম কুমার মণ্ডল উপজেলার দুড়দুড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখার সহকারী শিক্ষক। 

অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে টানা ৩ মাস ২১ দিন পর্যন্ত কোনো ছুটি আবেদন ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি নিয়মিতভাবে ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বেতন তুলেছেন।

বিদ্যালয় পরিদর্শনে দেখা গেছে, হাজিরা খাতায় তার অনুপস্থিতি উল্লেখ করা রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও জানিয়েছেন, তাকে দীর্ঘদিন ক্লাস নিতে দেখা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তম কুমার মণ্ডল দুটি ফৌজদারি মামলার আসামি। 

এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার কর্মকারের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি। অপর মামলায় তিনি গোঁসাই আশ্রমে গুলিবর্ষণের ঘটনার ২ নম্বর আসামি। এসব কারণেই তিনি আত্মগোপনে আছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তম কুমার মণ্ডল দাবি করেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তবে তিনি কোনো মেডিকেল সনদ বা ছুটির আবেদন কর্তৃপক্ষকে দেননি। বরং সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার বলেন, অনুপস্থিতির কারণে উত্তম কুমারকে তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেননি। পরে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী মৃধা বলেন, বর্তমানে ইএফটি বেতন বন্ধ করার কোনো ডিজিটাল সুবিধা নেই, তবে আগস্ট থেকে তা কার্যকর হতে পারে। শিক্ষক উত্তম কুমারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

স্থানীয় অভিভাবকরা বলছেন, একজন শিক্ষক মাসের পর মাস কর্মস্থলে না গিয়ে সরকারি অর্থ গ্রহণ করলে তা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক উদাহরণ হয়ে থাকে। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।