নাটোরের বড়াইগ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দখলে থাকা সরকারি জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বিএনপির অফিস ঘর নির্মাণ করছিল স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাঁতি দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মী। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপস্থিত হয়ে নির্মাণাধীন ওই ঘর ভাঙার নির্দেশ দিলে তা ভাঙা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার জের ধরে দখলদার চিহ্নিত ওই নেতাকর্মীরা হামলা চালায় ওই বাজারের ইজারাদার স্থানীয় যুবদল নেতা বাবলু প্রামাণিকের ওপর। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে আহত হয় তার নাবালক ছেলে আবু তালহা।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নগর মেরীগাছা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত বাবলু প্রামাণিক (৫০) ও ছেলে আবু তালহাকে (১৭) উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বাবলু প্রামাণিক বাদী হয়ে শনিবার রাত ১০টার দিকে বড়াইগ্রাম থানায় ৮ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
আসামিরা হলেন- রায়হান (৩৫), আনোয়ার (৩২), ইউনুস (৫০), তাইজুদ্দিন (৪৮), হাসেম (৪৫), ফুয়াদ (৪২), বানি আমিন (৫৫) ও নাহিদ (৩৫)। এদের সকলের বাড়ি মেরীগাছা এলাকায়।
অভিযোগে জানা যায়, মেরীগাছা বাজারে দীর্ঘবছর ধরে সরকারি জায়গায় কাঁচামালের ব্যবসা করে আসছিল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ মোল্লা। সম্প্রতি তার ব্যবসা সাময়িক বন্ধ থাকার সুযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাঁতি দলের কয়েকজন চিহ্নিত নেতাকর্মী ওই জায়গা দখল করে এবং বিএনপির অফিস ঘর নির্মাণের কথা বলে সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে টিনের ছাপড়া দেওয়ার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পায় এবং তাৎক্ষণিক তিনি ওই নির্মাণাধীন ঘর ভাঙার নির্দেশ দিলে তা ভাঙা হয়। ইউএনও ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর দুপুর ১২টার দিকে উল্লেখিত ওই নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায় ইজারাদার বাবলু প্রামাণিকের ওপর। তারা ধারালো হাঁসুয়া, লোহার পাইপ, লোহার হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করলে এতে রক্তাক্ত জখম হয় বাবলু প্রামাণিক। এ সময় পিতাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে ছেলে তালহা হামলা শিকার হয় এবং গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হামলার শিকার পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত বাবলু প্রামাণিক জানায়, বাজারের সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ হচ্ছে এ খবর ইউএনও স্যারকে আমি দিয়েছি এমন সন্দেহ করে ওরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমার নাবালক ছেলে আমাকে বাঁচাতে এসে সেও গুরুতর জখম হয়েছে। আমি তো এ খবর ইউএনও স্যারকে দেই নাই। তাহলে কেন আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। আমার ও আমার ছেলের ওপর অন্যায়ভাবে এই হামলার উপযুক্ত বিচার চাই।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়োর হোসেন জানান, এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।