পাবনার চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়নের জালেশ্বর গ্রামে ঘুমন্ত অবস্থায় সোহাগী রানী নামের ৫ মাস বয়সি মেয়েকে পুকুরে ফেলে হত্যার পর মেয়েকে খুঁজে না পাওয়া ও বিচার দাবির নাটক সাজান মা। পুলিশের তদন্তের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য।
সোমবার (২ মে) সকাল ১০টার দিকে চাটমোহর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার। শুক্রবার (৩১ মে) সকালে শিশুটির মৃত্যুর পর হত্যার রহস্য তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।
অভিযুক্ত শ্রাবন্তী বিশ্বাস ওই এলাকার কমল মণ্ডলের স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ৫ মাস বয়সি কন্যাশিশু সোহাগী রানীকে নিজ বাড়ির উঠানের চৌকিতে শুইয়ে রেখে পাশের বাড়িতে গরুর খড় আনতে যান মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস। পরে ফিরে এসে তার শিশুকন্যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরবর্তীতে পাশের বড়াল নদীতে উপুড় হওয়া অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহের সন্ধান মেলে। এ ঘটনায় ব্যাপক আহাজারিতে পরিবেশ ভারি করে তোলেন মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস। হত্যা মামলাও করতে চান। কিন্তু তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা দেখা গেলে ঘটনা তদন্তে তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসল তথ্য বেরিয়ে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস নিজেই মেয়েকে হত্যা করেছেন। সাংসারিক অশান্তি ও শিশু মেয়ে পালনে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারায় অসহ্য মনোভাবের জায়গা থেকে তিনি নিজেই ওইদিন সকালে ঘুমন্ত শিশুকে পুকুরে ফেলে দেন। পরে তার মৃত্যু হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার বলেন, ঘটনাটিকে নাটকীয় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ঘাতক মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস। মেয়েকে হত্যা করে বিচার দাবিতে নিজেই হত্যা মামলা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমাদের কাছে রহস্য ধরা পড়ে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা শ্রাবন্তী বিশ্বাসকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে। তাকে আটক করে রোববার (১ মে) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :