ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই, ২০২৫

পাবনার বেড়ায় যমুনা নদীতে ভাঙন, দিশাহারা নদীপাড়ের বাসিন্দারা

পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৫, ০২:১১ পিএম
পাবনায় রাক্ষুসে রূপ ধারণ করেছে যমুনা নদী। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পাবনায় রাক্ষুসে রূপ ধারণ করেছে যমুনা নদী। ভাঙন শুরু হওয়ায় পাবনার বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চর বক্তারপুর গ্রামের নদীপাড়ের বাসিন্দারা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশকিছু বাড়িঘর। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন বহু পরিবার। হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, বিদ্যালয়সহ শতাধিক পরিবার।

সম্প্রতি গ্রামটিতে গিয়ে কথা হয় কৃষক হানিফ শেখের স্ত্রী আক্তার বানুর সঙ্গে। আলাপকালে তিনি জানান, গত তিন বছরে তিনবার তাদের ঘর যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারও একই আশঙ্কায় দিন কাটছে। গেল কোরবানির ঈদের দিন নদীতে অনেকের বাড়ি ভেঙে গেছে। ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে নদীভাঙন। এরপর থেকেই ভয়ে আছি—কখন আবার ভাঙন শুরু হয়।

একই গ্রামের শাজাহান আলী বলেন, এই বয়সে তিনি অন্তত ছয়বার নদীভাঙনের সম্মুখীন হয়েছেন। বর্তমানে যেখানে বসবাস করছেন, কয়েক বছর আগেও সেখান থেকে নদী ছিল প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। ভাঙতে ভাঙতে নদী তার দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দাবি, ভাঙন রোধে দ্রুত ও স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে—তবেই মানুষ বাঁচবে।

চর বক্তারপুর গ্রামের জোসনা খাতুন বলেন, সন্তান আর গবাদিপশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। ঈদের দিন রান্নাবান্না তো দূরের কথা, খাওয়া পর্যন্ত হয়নি। দিনভর ভাঙনের আতঙ্কে ছিলাম।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত এক মাসে অন্তত ২০টি বাড়িঘর ও অর্ধশতাধিক বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে একটি মসজিদ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক পরিবার।

এ বিষয়ে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) হায়দার আলী বলেন, কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।