পটুয়াখালীর দশমিনায় শিক্ষক দম্পতিকে লাঞ্চিতের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসানের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার ও সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে অপসারণের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল দশমিনা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় দশমিনা উপজেলা পরিষদ চত্বরে ছাত্র জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এতে অংশ নিয়েছেন দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দশমিনা বেগম আরেফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়াও স্থানীয় রাজনীতিক, শিক্ষক, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষও একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এর আগে বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। এতে দূরপাল্লার পরিবহনসহ অসংখ্য যানবাহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যায় পুলিশের পাহারায় ইউএনও ইরতিজা হাসান দশমিনা ত্যাগ করেন। তবে তার গাড়ি বহর লক্ষ্য করে ধাওয়া দেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিনও ছাত্র জনতা ইউএনও প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তারা জানান, সরকারি ছুটি শেষে রোববার ও সোমবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইউএনও ইরতিজা হাসান ও তার দুর্নীতির সহোদর দুই কর্মকর্তাকে অপসারণ না করলে মঙ্গলবার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বলেন, টানা দ্বিতীয় দিন আমাদের আন্দোলন চলছে। ইউএনও ইরতিজা হাসান গতকাল ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পালিয়েছে, কিন্তু তাকে অফিসিয়ালভাবে অপসারণ দেখানো হয়নি। কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় নিলে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তারা আরও বলেন, আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে উপজেলা সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি ও ঘুষবাণিজ্যের প্রকৃত চিত্র বুঝবে। এখন থেকে যে দপ্তরে ঘুষবাণিজ্য চলবে সেখানে প্রতিবাদ হবে। আমরা আর এই দেশে কোনো প্রশাসনের ধারা শিক্ষককে লাঞ্ছিত হতে দেখতে চাই না। ভবিষ্যতে যাকে ইউএনওর দায়িত্ব দেওয়া হবে, সে যেন চেয়ারে বসার আগে দেশের ছাত্র-জনতার সজাগতা টের পায়।
এদিকে ইউএনও ইরতিজা হাসানকে ১৪ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সাত দিনের নৈমিত্তিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘ইউএনওকে ৭ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার দেশে ফিরলে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন