পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) আহ্বায়ক ও পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে রক্ষা করতে গিয়ে তাকে উল্টো হামলার অভিযোগের শিকার হয়েছেন পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের মো. জাকারিয়া হোসেন মুন্সী। ঘটনা ঘটেছে গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার বড় পোল এলাকায়।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে জাকারিয়া হোসেন বলেন, তিনি মোটরসাইকেলে সদর থেকে ইন্দুরকানীর দিকে যাচ্ছিলেন। বড় পোলের কাছে মানুষের ভিড় দেখে তিনি থামেন এবং দেখেন একটি কালো নোয়া মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন ব্যক্তি চেয়ারম্যান শাহিনকে নামানোর চেষ্টা করছেন। তিনি শাহিনকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এবং এক পথচারীকে পুলিশে খবর দিতে বলেন। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শাহিনকে থানায় নিয়ে যায়।
জাকারিয়ার দাবি, তিনি পুলিশের গাড়ির পেছনে থানায় যান, কিন্তু সেখানে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। শাহিন চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, জাকারিয়া তার গতিপথ রোধ করেছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয় এবং চেয়ারম্যান লিখিতভাবে জানান, জাকারিয়ার বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু পরবর্তীতে মিডিয়ায় শাহিন বলেন, জাকারিয়া তাকে মারধর করেছেন এবং তার দুটি মোবাইল নিয়েছেন। জাকারিয়া এই অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।
জাকারিয়া হোসেন অভিযোগ করেন, শাহিন দীর্ঘদিন ধরে জেপির (মঞ্জু) ইন্দুরকানী উপজেলা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তিনি দাবি করেন, শাহিনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহিন মঞ্জু-সমর্থিত ক্ষমতার জোরে শুধু পত্তাশী ইউনিয়ন নয়, পুরো উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রমে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঘর প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ, ইউনিয়নে চাকরি ও দফাদারে ঘুষ, ভিজিডি চাল চুরি, সরকারি গাছ বিক্রি, ভাতার কার্ড বিতরণে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও ইউপি সদস্যদের সুবিধা বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে। ইউপি সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব করেও দীর্ঘদিনের পর সুরাহা পাননি।
রাজনৈতিকভাবে সুযোগসন্ধানী হিসেবে পরিচিত শাহিন, নিজের রাজনৈতিক অভিভাবক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর মঞ্জুর সাবেক শিষ্য ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজের দলে যোগ দিয়েছেন।
পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা এবং উল্টো তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া ও তাকে হেনস্থা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন।


