ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ফিলিস্তিনপন্থিদের বাধায় পণ্ড হয়েছে ইসরায়েলি অর্কেস্ট্রার একটি কনসার্ট। কনসার্টের স্থলে বিক্ষোভকারীরা ধোঁয়ার ফ্লেয়ার জ্বালিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে দর্শকদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে প্যারিস ফিলহারমনি কনসার্ট হলে এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আয়োজক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, তিন দফায় কিছু দর্শক কনসার্ট ব্যাহত করার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে দুবার তাঁরা ধোঁয়া ছড়িয়েছেন। পরে উপস্থিত দর্শকেরা বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। বিশৃঙ্খলাকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয় এবং কনসার্ট পুনরায় শুরু হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লরঁ নুনেজ এ ঘটনার ‘কঠোরভাবে নিন্দা’ জানিয়েছেন।
এই কনসার্টকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল আয়োজক সংস্থা ও ফ্রান্সের অন্যতম বৃহৎ শ্রমিক ইউনিয়ন ‘জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার’-এর মধ্যে। গত মাসে ইউনিয়নটি দাবি করে, কনসার্ট হলে যেন গাজার চলমান পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের কথিত যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে দর্শকদের অবহিত করা হয়। তাদের বক্তব্যে বলা হয়, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চলছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
তবে কনসার্ট হল কর্তৃপক্ষ এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে জানায়, তারা কখনোই আমন্ত্রিত শিল্পীদের চলমান রাজনৈতিক বিরোধ বা সংবেদনশীল বিষয়ে অবস্থান নিতে বাধ্য করে না।
এদিকে ফ্রান্সের বামঘেঁষা রাজনীতিকদের কেউ কেউ ইসরায়েলি শিল্পীদের বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে রুশ শিল্পীদেরও এভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য মানোঁ ওব্রি বলেন, রাশিয়া ইউরোভিশন থেকে বাদ পড়লে কেউ অবাক হয়নি। একইভাবে ইসরায়েলও যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত।
ইসরায়েলি অর্কেস্ট্রার পরিচালক লাহাভ শানি ইতিপূর্বে বেলজিয়ামেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। বেলজিয়ামের ফ্ল্যান্ডার্স ফেস্টিভ্যাল তাঁর কনসার্ট বাতিল করেছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ আমাদের সবাইকে ব্যথিত করে, কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক বিবৃতি দিতে বাধ্য করা দুঃখজনক।’



