পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নিজ কন্যা লামিয়া আক্তার মুন্নি (১৪) এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী রোববার (৯ নভেম্বর) আমরণ অনশনে বসছেন পিতা মোশারফ হোসেন হাওলাদার।
শনিবার (৮ নভেম্বর) মঠবাড়িয়ার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনে হাজির হয়ে মোশারফ এ তথ্য জানান। সে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজ নগর এলাকার চানমিয়া হাওলাদারের ছেলে। এদিকে একই দাবিতে গত ৪ নভেম্বর বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন।
মোশারফ হোসেন কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, ২০২৩ সালের ২০ মার্চ অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া তার মেয়ে লামিয়া আক্তার মুন্নি নৃশংস ভাবে খুন হয়।
মেয়ে হত্যার বিবরণ হিসেবে তিনি জানান, তার স্ত্রী পলি আক্তার সুন্দরী হাওয়ায় তৎকালীন মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টিকিটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন জমাদ্দার লোলুপ দৃষ্টি দেয়। একপর্যায়ে তার স্ত্রীকে দিয়ে তাকে ডিভোর্স দিয়ে তার ঘরে এক ধরনের রক্ষিতা হিসেবে রেখে দেয়। পরবর্তীতে তার স্ত্রী দাউদখালি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
এই পরকীয়া বৈধ করতে তার অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া মেয়ে মুন্নিকে শহিদুল মেম্বারের ছেলের সাথে কথিত বিয়ে দেয়। মোশারফ হোসেনের দাবি তার মেয়ের কোন বিয়ে হয়নি। এক সময় পলি আক্তার ও শহিদুল মেম্বার এলাকা থেকে পালিয়েও যায়। তিনি ধারণা করছেন পলি আক্তার ও শহিদুল মেম্বারের অবৈধ কর্মকান্ড তার মেয়ে মুন্নি দেখে ফেলায় নৃশংসভাবে খুন হয় তার মেয়ে।
তৎকালীন সময়ে শহিদুল মেম্বারের বাড়ির লোকজন তার মেয়ের মরদেহ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি মেয়ে খুনের বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের মরদেহ ফ্রিজ থেকে শনাক্ত করে ফ্রিজ বিল ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।
পরে তার নিজ খরচে মরদেহের পোস্টমর্টাম করেন। সেখানেও সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান রিপন জমাদ্দার প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন প্রশাসনের মাধ্যমে পোস্টমর্টাম রিপোর্ট পরিবর্তন করেন।
তিনি ক্ষোভের সাথে আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান রিপন, শহিদুল মেম্বার, শহিদুল মেম্বারের ছেলে হাসান ও নিহত মুন্নির মা পলি এ হত্যা কান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু চেয়ারম্যান রিপন নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য সেই পলিকে বাদি বানিয়ে শহিদুল মেম্বার সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়সারা একটি মামলা করেন। যা পরবর্তীতে অর্থের বিনিময় তারা মীমাংসা হয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি বিজ্ঞ আদালতে আমার মেয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সকলকে জড়িয়ে একটি মামলা করি। কিন্তু চেয়ারম্যান রিপন জমাদার এর প্রভাবে আমি এলাকায় আসতে পারিনি এবং মামলা পরিচালনাও করতে পারিনি। যে কারণে মামলাটি নষ্ট হয়ে যায়।
আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। আমার মামলাটি পুণরায় চালু করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি চাই।


