স্বাক্ষরতার হারে জেলা এগিয়ে থাকলেও উচ্চশিক্ষায় পিছিয়ে পড়া পিরোজপুরের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে জেলাটির বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অফ পিরোজপুর (বলেশ্বর)। যেটা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বলেশ্বর নামে পরিচিত।
সংগঠনটি বিভিন্ন উপজেলার কলেজগুলোতে গিয়ে উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ক্যাম্পেইন ও সেমিনার আয়োজন করছে। সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কলেজগুলোতে গিয়ে সরাসরি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আগ্রহী করে তুলছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী, ভাণ্ডারিয়া, মঠবড়িয়া এবং কাউখালী উপজেলার ১০টি কলেজে এই সংগঠনটি সফলভাবে সেমিনার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের নতুন করে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, সাক্ষরতার হারে পিরোজপুর বেশ এগিয়ে থাকলেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীরা ততটা আগ্রহী হচ্ছে না। এই পিছিয়ে থাকাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অফ পিরোজপুর এই ব্যতিক্রমী ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়ে কলেজগুলোতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সদস্যরা।
যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনিম আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেমা আফরিন রুপা, কামরুজ্জামান সিয়াম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম, শাহরিয়ার মিম, মো: রিমন সেখ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান খান সাগর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম, মো: মাইনুল ইসলাম নবীন, এইচ এম সজিব, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, আনজির আব্দুল্লাহ, আরিফ বিন মুজিব, হাসানুল বান্নাহ মুবিন, চাঁদনী ইসলাম, শ্রেয়া সমাদ্দর, শাহরিয়ার খান স্বপ্নিল, জাহিদুল ইসলাম, কামরুজ্জামান সিয়াম, আবদুর রহিম, নেসার উদ্দিন জিহাদ, নাবিলা তাসনিম, আদুরি বিশ্বাস, হাওলাদার মোহাম্মদ নয়ন, সাব্বির হোসেন, অতশী, জি এম শাফিসহ আরও অনেকে।
এই বিশেষ আয়োজন প্রসঙ্গে কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সংগঠনটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাঁরা মন্তব্য করেছেন যে, এ ধরনের অনুপ্রেরণামূলক আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করবে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মো: ওমর ফারুক বলেন, আমাদের জেলা শিক্ষায় এগিয়ে থাকলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগগুলো সম্পর্কে অনেকে জানে না। ‘বলেশ্বর’ সেই সুযোগগুলো শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরে তাদের স্বপ্ন দেখতে শেখাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই সেমিনারগুলো পিরোজপুরের শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং উচ্চশিক্ষার হার বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে স্বপ্ন দেখতে ও নিজেদের জেলার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে উৎসাহিত করতে সাহায্য করবে। স্থানীয় শিক্ষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রশংসা আমাদের এই আয়োজনের সাফল্য প্রমাণ করে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিয়াম ফেরদৌস ইমন বলেন, উচ্চশিক্ষায় আমাদের পিছিয়ে থাকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বলেশ্বর বদ্ধপরিকর। আমরা এখন পর্যন্ত ১০টি কলেজে সফলভাবে সেমিনার করেছি এবং আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
জেলার তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা পিরোজপুরের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, পিরোজপুরের শিক্ষার্থীরা এখন আর পিছিয়ে থাকবে না, তারা দেশ-বিদেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজেদের জায়গা করে নেবে।
বলেশ্বরের এই প্রচেষ্টা পিরোজপুরের তরুণ প্রজন্মকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি জেলার সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।



