দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিনির্ভর জেলা ঝিনাইদহে পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। বীজ থেকে উৎপাদিত চারা রোপণ করা হচ্ছে মাঠগুলোতে। শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোর থেকে সারাদিন পেঁয়াজের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। মাঠের পর মাঠ পেঁয়াজ রোপণের দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।
জেলার শৈলকুপা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের চাষ হয়। চলতি মৌসুমে রোপণ করা হচ্ছে উচ্চফলনশীল লাল তীর কিং, রাণী ওয়ান, রাজশাহী কিংসহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ।
গত বছর বীজতলায় চারা তৈরির সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা। নতুন করে চারা তৈরি করে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা। পেঁয়াজ রোপণের জন্য বিঘা প্রতি ২০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। শ্রমিক সংকটে চিন্তার ভাঁজ কৃষকের মুখে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ১৩,৮৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০,২৮২ হেক্টর এবং অর্জন হয়েছিল ১৩,৭১২ হেক্টর জমিতে ২,৭৩,২১২ মেট্রিক টন।
শৈলকুপা উপজেলার সাপখোলা গ্রামের কৃষক সুমন হোসেন জানান, পেঁয়াজের চারা রোপণের সময় হয়েছে। আমি ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগাচ্ছি। পেঁয়াজ লাগানোর শ্রমিক সংকট রয়েছে। এবার বৃষ্টিতে চারা নষ্ট হয়েছে।
নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেকটা বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। এতে করে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। সেই তুলনায় দাম পাওয়া যাবে কিনা সেটিই চিন্তার বিষয়।
একই উপজেলার দেবতলা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন জানান, হালি পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। একযোগে রোপণ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের চাহিদা বেশি। শ্রমিক সংকটে পেঁয়াজ রোপণে দেরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একজন শ্রমিক সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা নিচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ কামরুজ্জামান জানান, জেলাজুড়ে পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। শুরুর দিকে অতিবৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষক কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছে। চাষিরা নতুন করে চারা তৈরি করেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
জেলায় সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কোনো প্রকার কৃত্রিম সংকট যেন তৈরি না হয়, সেজন্য কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।


