ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

অর্থ আত্মসাৎ করে কাঁদলেন সরকারি কর্মচারী, বললেন ‘আমার ভুল হয়েছে’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৮:২২ এএম
অভিযুক্ত শিল্পী খাতুন ও মজিবর রহমান মোল্লা। ছবি- সংগৃহীত

রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর নকল করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলা পরিষদের সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর শিল্পী খাতুন এবং গাড়িচালক মজিবর রহমান মোল্লা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাত থেকে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৩০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। বিষয়টি উদঘাটন হলে সদরের ইউএনও মারিয়া হক উভয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগনামা ও কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।

ইতিমধ্যে শিল্পী খাতুন স্বীকারোক্তি দিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের মধ্যে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে বাকি ২ লাখ ৯০ হাজার ৩০ টাকা এখনো আদায় হয়নি।

এ বিষয়ে গাড়িচালক মজিবর রহমান মোল্লা বলেন, আমার অ্যাকাউন্টে ৫ দফায় ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯০০ টাকা এসেছে। শিল্পী খাতুন আমাকে বলেছিলেন টাকা তুলে দিতে, আমি তাই করেছি। ইউএনও স্যার আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি সব সত্য বলে দেই। এরপর শিল্পী স্যারের পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করে ভুল স্বীকার করেন।

ইউএনওর জারি করা নোটিশে বলা হয়, ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত সময়ে চুরি, আত্মসাৎ, তহবিল তসরুফ ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করেছেন অভিযুক্তরা। ব্যাংক হিসাব বিশ্লেষণে এসব অনিয়ম ধরা পড়ে।

নোটিশে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আত্মসাৎকৃত সমুদয় অর্থ উপজেলা পরিষদের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হিসাবে নির্ধারিত চলতি অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিল্পী খাতুনের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।

পরে বাসায় গেলে তার স্বামী জানান, তিনি অসুস্থ। এক পর্যায়ে শিল্পী খাতুন সাংবাদিকদের কাছে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি মজিবরের কথায় ভুল করেছি। এখন আর কিছু বলার নেই। আমি ইতিমধ্যে ইউএনও স্যারের নির্দেশনায় ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছি। বাকি টাকা মজিবর জমা দিবে।

এ বিষয়ে ইউএনও মারিয়া হক বলেন, অফিসিয়াল কাগজপত্রে কিছু অস্বাভাবিকতা দেখে আমরা তদন্ত শুরু করি। জালিয়াতির প্রমাণ মেলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, গাড়িচালক মজিবর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমিয়ে ও জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগও উঠে এসেছে।