ঢাকা শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫

মারধরের ১২ দিন পর সাবেক প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
মফিজুল ইসলাম টুলু। ছবি- সংগৃহীত

রাজশাহীর পুঠিয়ায় মারধরের ১২ দিন পর মফিজুল ইসলাম টুলু (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে তিনি মারা যান।

মফিজুল ইসলাম রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

এ ছাড়া তিনি সম্পর্কে সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়েরর পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই।

গত ১ জুন পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক তাকে মারধর করেছিলেন বলে স্বজনদের অভিযোগ।

মফিজুল ইসলামের চাচাতো ভাই সাবেক সেনাসদস্য মো. রতন জানান, হাতিনাদা গ্রামে মফিজুলের একটি পুকুর ইজারা নেওয়া আছে। পুকুরটি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের স্বজনদের। পুকুর ইজারার মেয়াদ এখনো আছে। কিন্তু তারপরও টাকা দাবি করে আসছিলেন রফিকুল। এ জন্য সম্প্রতি তার চাচাতে ভাই প্রায় এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু আরও টাকা দাবি করা হচ্ছিল।

গত ১ জুন মফিজুল ইসলাম পুকুর দেখতে যান। এ সময় রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলেরা আবারও টাকা চান। মফিজুল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার মোটরসাইকেলটি কেড়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। গতকাল বুধবার রফিকুলের বাড়ি থেকে এই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

রতন জানান, মারধরের পর মফিজুল ইসলামকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। তারপর ছুটি দেওয়া হলে তাকে বাড়ি আনা হয়েছিল। এরপর আবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এবার বুধবার তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি আসার পর সন্ধ্যায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরদিন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে তিনি মারা যান।

ওই নির্যাতন এবং অপদস্থ করার কারণে মফিজুলের মৃত্যু হয়েছে বলে তারা মনে করেন। তবে থানায় অভিযোগ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেননি।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ‘চাঁদা না পেয়ে’ গত সোমবার লোকজন নিয়ে হাতিনাদা গ্রামের দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার তাকে দল থেকেও আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম এখন আত্মগোপনে। তাই তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

পুঠিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে মফিজুলের মোটরসাইকেলটি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যা এখন থানাতেই আছে।

রফিকুলের ছেলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, মোটরসাইকেলটি পুকুর পাড়ে পড়েছিল। তাই বাড়িতে এনে রাখা হয়। বুধবার এ ব্যাপারে মফিজুলের ছেলের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করতে চাননি। মফিজুলের মৃত্যুর খবরটি তিনি শুনেছেন। পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।