রাত পোহালেই এইচএসসি পরীক্ষা। অথচ হাতে পৌঁছেনি প্রবেশপত্র। দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন খাতুন। শেষ মুহূর্তে তার পাশে দাঁড়ান কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বায়েজীদ বোস্তামী।
শিক্ষার্থীকে নিরাশ না করে গভীর রাত পর্যন্ত বোর্ড অফিসে যোগাযোগ করে তিনি নিজেই প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেন এবং মধ্যরাতে তা শিক্ষার্থীর বাড়িতে পৌঁছে দেন। ফলে পরদিন সকালে নিশ্চিন্তে পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছেন শারমিন।
জানা গেছে, নির্ধারিত তারিখে প্রবেশপত্র বিতরণের সময় ব্যক্তিগত কারণে কলেজে উপস্থিত হতে পারেননি শারমিন খাতুন। পরে পরীক্ষার আগের দিন (বুধবার) কলেজে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, ফরম পূরণের কিছু ত্রুটির কারণে তার প্রবেশপত্র আসেনি। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পরিবারের একমাত্র আশা হয়ে ওঠা এই শিক্ষার্থী।
ঠিক তখনই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বায়েজীদ বোস্তামী। তিনি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতেই বোর্ড অফিসে যান এবং প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে ছাত্রীটির বাড়িতে পৌঁছে দেন। পরদিন পরীক্ষা শেষে ছাত্রীটির খোঁজও নেন তিনি।
শারমিন খাতুন বলেন, ‘স্যারের আন্তরিকতা ও সহযোগিতায় আমি পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছি। নাহলে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সুযোগ হারিয়ে ফেলতাম। দেশের অনেক জায়গায় অনেক শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। আমি স্যারের জন্য চিরকৃতজ্ঞ।’
অধ্যাপক বায়েজীদ বোস্তামী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। ওদের যেকোনো সমস্যা আমাদের দায়িত্ব। শারমিনের বিষয়টি জটিল ছিল, কিন্তু আল্লাহর কৃপায় সময়মতো সমাধান করতে পেরেছি। এটা কোনো ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, একজন শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্ব।’
এ বিষয়ে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনা আবেদীন বলেন, ‘অধ্যাপক বায়েজীদ বোস্তামী একজন সৎ, মানবিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক। আমি গর্বিত যে, আমাদের কলেজে এমন একজন দায়িত্বশীল শিক্ষক রয়েছেন। তার মতো মানুষের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মূল্যায়ন হওয়া উচিত।’