ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম
রাজশাহীতে পদ্মার পানি ১৭.৪৩ মিটার, প্লাবিত নিচু এলাকা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে এবং তা বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় রয়েছে। এতে নদীতীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। চরবাসীরা গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯টায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৭.৪৩ মিটার, যা বিপদসীমা ১৮.০৫ মিটার থেকে মাত্র ০.৬২ মিটার নিচে। নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে টি-বাঁধ এলাকায় প্রবেশ ও পরিদর্শন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাশাপাশি নদীর পাড়ঘেঁষা ব্যবসায়ী ও দোকানিদের স্থানত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ জুলাই পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে। সেদিন পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৩৫ মিটার। এরপর কিছুটা কমলেও ৩১ জুলাই থেকে পানি আবার বাড়তে শুরু করে এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে।

গত ১০ আগস্ট সকাল ৬টায় পানি ছিল ১৭.১৩ মিটার, যা সন্ধ্যায় বেড়ে হয় ১৭.২২ মিটার। ১১ আগস্ট সকালে তা দাঁড়ায় ১৭.৩২ মিটার এবং সন্ধ্যায় হয় ১৭.৩৯ মিটার।

পানি বৃদ্ধির ফলে রাজশাহী ও আশপাশের বিভিন্ন চর তলিয়ে গেছে। চর খিদিরপুরের বাসিন্দা মাসুদ বলেন, ‘নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের গবাদিপশু ও মালামাল লোকালয়ে নিতে হয়েছে। কিন্তু এখন গোখাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।’

আরেক বাসিন্দা ইমরান আলী জানান, ‘প্রতিদিন নৌকায় করে চরবাসীরা মালামাল সরাচ্ছেন। কেউ আত্মীয়ের বাড়ি, কেউবা ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু অনেক গবাদিপশু এখনো চর এলাকায় রয়ে গেছে, যেগুলো সরাতে সমস্যা হচ্ছে।’

পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকের বাড়ির কাছে পানি পৌঁছে গেছে। চর ছেড়ে লোকালয়ে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, তবে সবচেয়ে বড় চিন্তা গবাদিপশু নিয়ে।’

পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক জানান, ‘রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮.০৫ মিটার। সোমবার সন্ধ্যায় পানি ছিল ১৭.৩৯ মিটার, মঙ্গলবার সকালে তা বেড়ে হয়েছে ১৭.৪৩ মিটার। পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’

স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, উজানে ভারী বর্ষণ বা গঙ্গার পানিপ্রবাহ বাড়লে পদ্মার পানি দ্রুত বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে আরও বড় পরিসরে মানুষকে সরিয়ে নিতে হতে পারে। কৃষিজমি, বসতঘর ও গোখাদ্যের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। দীর্ঘদিন পর পদ্মার পানি এভাবে বাড়ায় জনমনে উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।