টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। এতে করে রাঙামাটি জেলার লংগদু ও বরকল উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গত ৩-৪ দিনের টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়তে শুরু করে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যে অসংখ্য বাড়ি-ঘর, স্কুল ও মাদ্রাসায় পানি ঢুকেছে। ফলে এসব এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লংগদু উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে, এতে ব্যাপক শিক্ষাক্ষতি হচ্ছে। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় কেউ কেউ বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন, আবার কেউ ঘরের ভেতরে মাচাং তৈরি করে বসবাস করছেন। গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লংগদু উপজেলার জারুলবাগান, গোলশাখালী, কাট্টলি, ভাইবোনছড়া, ঘনমোড়, সোনাই, করল্যাছড়ি, কালাপাকুজ্জ্যা, মাইনীমুখ ইউনিয়নসহ বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে বরকল উপজেলার বিভিন্ন এলাকাও পানির নিচে চলে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বীজতলা। ফলে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। কষ্টে দিন কাটছে বানভাসী মানুষের।
তাদের দাবি, কাপ্তাই হ্রদের পানি যদি ৪-৫ ফুট কমিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে নিম্নাঞ্চলের মানুষ বিপদ থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। ইতোমধ্যে অনেক পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, কাপ্তাই কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা তারেক আহম্মদ জানান, বুধবার বিকাল পর্যন্ত হ্রদের পানির উচ্চতা ছিল ১০৮.০৮ ফুট (এমএসএল)। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৮ ইঞ্চি করে ১৬টি জলকপাট খুলে পানি ছাড়াও হচ্ছে। তবুও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আরও পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে এ বিষয়ে জানতে লংগদু ও বরকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের মোবাইলে ফোন করা হলেও তাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন