ভারতের হাকিমপুর ক্যাম্পে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণকৃত নারী ও শিশুসহ ১৪ বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হন্তান্তর করেছে বিএসএফ।
রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের হন্তান্তর করা হয়।
হন্তান্তরকৃত বাংলাদেশিরা হলেন- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার সানকিডাঙ্গা গ্রামের মো. আফজাল শেখের ছেলে মো. মিজানুর রহমান শেখ (৩৮), মিজানুর রহমান শেখের স্ত্রী মোসা. শারমিন আক্তার (২৪), তাদের ছেলে শামীম শেখ (৭), মেয়ে রুমা শেখ (৪), একই গ্রামের মো. মোন্তফা শিকদারের ছেলে মো. নজরুল শিকদার (৫০), মো. নজরুল শিকদারের স্ত্রী মোসা. কহিনুর বেগম (৪৩), একই থানার বদনীডাঙ্গা গ্রামের মো. আফজাল শেখের ছেলে মো. কবির শেখ (৪০), কবির শেখের স্ত্রী মোছাম্মৎ তফুরা বেগম (৩০), পিরোজপুরের জিয়ানগর থানার চন্ডিপুর গ্রামের মো. হানিফ মৃধার ছেলে মো. আরমান মৃধা (২৫), মো. আরমান মৃধার স্ত্রীর হাজেরা আক্তার (২১), তাদের ছেলে হাফিজুল (৬), মেয়ে আমিনা (৩), মো. চুন্নু শেখের স্ত্রী মোসা. মুকুল বেগম (৪১) এবং সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার পদ্মবেউলা গ্রামের মোসলেম মোড়লের ছেলে আব্দুল কাদের মোড়ল (৪০)।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের হাকিমপুর চেক পোস্ট অতিক্রম করার সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যরা হাকিমপুর ক্যাম্পের একটি টহল দলের সদস্যরা তাদের আটক করে।
পরবর্তীতে রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ভারতীয় বিএসএস আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর দিবাজ্যোতি ডলি এবং বাংলাদেশ সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ তলুইগাছা বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আবুল কাশেমের মধ্যস্থতায় তলুইগাছা সীমান্তে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের হন্তান্তর করা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে তাদের সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশে সোপার্দ করা হয়।
ভারত থেকে ফিরে আসা নজরুল শিকদার জানান, বাগেরহাট ও পিরোজপুরের তারা ১৩ জন বেশ কয়েক বছর আগে সপরিবারে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। তারা ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরুতে থেকে দিনমজুরের কাজ করতেন। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের আটক করতে শুরু করে। ফলে গ্রেপ্তার এড়াতে তারা সেখান থেকে কয়েকদিন আগে কলকাতায় চলে আসেন। পরে শনিবার রাত ৮টার দিকে হাকিমপুর বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসর্মপণ করেন। বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে রোববার রাতে তাদের বিজিবির কাছে হন্তান্তর করে।
আশাশুনির আব্দুল কাদের মোড়ল জানান, তিনি কলকাতার হাওড়া এলাকায় থাকতেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে হাকিমপুর বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে আত্মসর্মপণ করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেসন্স) সুশান্ত ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হন্তান্তর বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই শেষে তাদের স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন