সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের চাঁদপুরে যমুনার তীব্র স্রোতে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। গবাদিপশুসহ হুমকিতে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, কেউ ঘরের খুঁটি খুঁলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
বৃদ্ধ আব্দুল মালেক মন্ডল জানান, ৭৪ বছর বয়সে প্রায় ২৫ বার নদীগর্ভে চলে গেছে বসতভিটা। এভাবে হঠাৎ করে যমুনার আগ্রাসী থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ গুলো দেখলে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারবে না। বেশ কয়েক বছর ধরেই যমুনার নদী ভাঙনে কয়েকশ বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। অবশিষ্ট এলাকা রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন আমরা যাব কোথায়?
এ বিষয়ে সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫৫ মিটার দূরে হাইস্কুল কমপ্লেক্স ভবন। এ ছাড়া অন্তত পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকিতে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিতের দিকে। দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে হবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুলগুলো নদীগর্ভে চলে যাবে।
সমাজসেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন, শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, নদীভাঙনের ভয়াবহতা দেখে আমরা হতবাক, চোখের সামনে কয়েকশ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩০টি বসতভিটা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। এই চরের আশপাশের অন্তত ১২টি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল। ভাঙনে সবাই এখন আতঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত সব অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ও বেশকিছু বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন