ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

পরীক্ষার আগেই অভিভাবকদের হাতে প্রশ্নপত্র, প্রাথমিকে আদায় হচ্ছে পরীক্ষার ফি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
টাঙ্গাইলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরিক্ষার ইংরেজি, গণিতসহ ছড়িয়ে পড়া প্রশ্নপত্র। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টাঙ্গাইলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে এ বছর প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা কর্মকর্তারা সরকারি নিয়ম অমান্য করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন। এ ছাড়া পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই অভিভাবকদের হাতে প্রশ্নপত্র চলে গেছে।

জেলার কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, গত ২৮ অক্টোবর ত্রিমাসিক, অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফি নির্ধারণ বিষয়ে অনলাইনে মতামত চাওয়া হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ফি ২০ টাকা, তৃতীয় ৩০ টাকা, চতুর্থ ৪০ টাকা, পঞ্চম ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে লিখিত অনুমোদনের আগেই টাকা আদায় শুরু হয়েছে।

গত ২৪ নভেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন পরীক্ষার জন্য ছয়টি নির্দেশনা দেন। নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের আসন বিন্যাস, প্রশ্নপত্র সিলগালা, গোপনীয়তা রক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কিন্তু সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জাকারিয়া হায়দার এই নির্দেশনা অমান্য করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষক ও অভিভাবক থেকে টাকা আদায় করছেন। পরীক্ষার আগেই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর সকল প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষকরা জানান, আদায়কৃত ফি থেকে উল্লেখযোগ্য অংশ উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হচ্ছে। এছাড়া মডেল বৃত্তি পরীক্ষার ওএমআর শীটের জন্যও ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

সদর উপজেলার রিকশা চালক লাল চান বলেন, ‘গরিব মানুষ হিসেবে বাধ্য হয়ে ফি দিয়েছি। না দিলে ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।’

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জাকারিয়া হায়দার বলেন, ‘মৌখিকভাবে অনুমতি পেয়েছি, সরকারি বরাদ্দ না থাকায় প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন জানান, জেলায় ১,৬২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পড়ছে। টাকা আদায় বা প্রশ্নপত্র বিতরণের ক্ষেত্রে লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো কাজ করা যাবে না।