ঠাকুরগাঁওয়ে মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে বেঁধে মারধর ও অর্ধেক মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (২২ মে) রাতে সদর উপজেলা রাজাগাঁও ইউনিয়নের উত্তর বটিনা আল-আকসা জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
ওই দুই শিশু হলেন- দেবীপুর ইউনিয়নের কিসমত কেশুরবাড়ি এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে ফয়সাল (১৩) ও বাবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে সজীব (১২)। তারা দুজনই স্থানীয় এক স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত বলে গেছে
স্থানীয় জানান, গত বুধবার মাগরিবের নামাজের পর থেকেই দুই শিশু মসজিদের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিল। এশার নামাজের সময় আবারও তাদের মসজিদ এলাকায় আবার ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এ সময় নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জিজ্ঞাসা করলে তারা নামাজ পড়তে আসছে বলে জানায়। পরে তাদের হাতে থাকা একটি ব্যাগে কিছু টাকা ও যন্ত্রপাতি দেখে মুসল্লিদের সন্দেহ হয়।
পরে মসজিদের দানবাক্সে গিয়ে দেখেন বাক্সের তালা ভাঙা ও বাক্স খালি। এ সময় দুই শিশুকে আটক করেন তারা। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে টাকা, প্লাস, টেস্টার ও ওয়াল কাটার মেশিন পাওয়া যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পরে শাস্তি হিসেবে দুই শিক্ষার্থীর হাত গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও মাথার অর্ধেক চুল কেটে দেওয়া হয়। এরপর তাদের পরিবারকে খবর দিলে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে দুই শিশুকে নিয়ে যান।
তবে স্থানীয় কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কেউ চুরি করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করে থানায় ধরিয়ে দেন। তারা শিশু, তাদের বয়সই বা কত। তাদের তো এভাবে মাথার চুল কেটে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা ঠিক হয়নি।’
এ বিষয়ে রুহিয়া থানা পুলিশের ওসি এ কে এম নাজমুল কাদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনো অভিযোগ পাইনি। কেউ চুরি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে, কেউ চুল কেটে দিতে পারে না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘চুরির অভিযোগে দুই শিশুর পা বেঁধে নির্যাতন ও চুল কর্তনের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। তবে কেউ অপরাধ করলে তার জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কেউ চুল কেটে দিতে পারে না। যারা এ কাজ করেছে তারাও অপরাধী।’
আপনার মতামত লিখুন :