বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম

রেললাইন যেন ‘লালগালিচা’

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া রেললাইন। ছবি-সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া রেললাইন। ছবি-সংগৃহীত

দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটা কোনো রেললাইন নয় যেন লাল গালিচা বিস্তীর্ণ পথ। কাছে গেলে স্পষ্ট হবেন রেললাইনের ধারে শুকাতে দেওয়া হয়েছে পাকা লাল মরিচ।

এ দৃশ্য ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া রেলস্টেশন এলাকার। মরিচ শুকিয়ে বাজারজাত করলে বাড়তি দাম পাওয়া যায় এবং অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। তাই প্রতিদিন ভোরে বস্তায় শুকনা মরিচ রেললাইনের ধারে নিয়ে আসেন চাষিরা। 

দু’পাশে ও রেল লাইনের পাতের মাঝখানে পলিথিন, পাটি, মাদুর বিছিয়ে মরিচ শুকাতে দেন। পরে প্রক্রিয়াজাত শেষে সে মরিচ যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

সোমবার (২৬ মে) রেললাইনের পাশে কথা হয় চাষি এরশাদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাঁচা অবস্থায় মরিচের দাম কম থাকে। এ কারণে শুকিয়ে বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাক নিয়ে এখানে মরিচ কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা। সে সময় স্টেশন এলাকা কর্মচঞ্চল থাকে।’

মরিচ কিনতে আসা ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, ‘এ জেলার মরিচের আকার, বর্ণ ও স্বাদের কারণে চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ স্টেশন এলাকা থেকে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মরিচ কেনাবেচা হয়। এলাকার ৭০ ভাগ কৃষকই মরিচ চাষের সঙ্গে জড়িত।’

বগুড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী মহসিন আলী বলেন, ‘এই এলাকার মরিচ রঙে ঘন, ঝাঁজে তীব্র। বাজারে কদর অনেক বেশি। প্রতিদিন এখানে ২০-২৫ লাখ টাকার মরিচ কেনাবেচা হয়। আমরাও এসেছি মরিচ কেনার উদ্দেশ্যে।’

রেললাইনের ধারে মরিচ শুকাতে এসেছিলেন স্থানীয় কৃষক খায়রুল বাসার। তিনি বলেন, ‘প্রতি বিঘায় এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ মণ করে পাকা মরিচের ফলন পেয়েছেন। এবার মরিচের বাজার তেমন একটা  ভালো নয়। প্রতি মণ মরিচ প্রায় ৪ হাজার সাড়ে হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বিঘায় চাষে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। গত বছর একমন মরিচ বিক্রি হয়েছে ৭/৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে এবার দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

স্টেশন এলাকা থেকে কিছুটা দূরে রুহিয়া পশ্চিম, রাজাগাঁও ইউনিয়ন, রুহিয়া ইউনিয়ন। এসব এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে গ্রীষ্মকালীন মরিচ চাষ হয়েছে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁচা-পাকা মরিচ। খেত থেকে তুলে পাকা মরিচ রোদে শুকাতে ব্যস্ত গৃহস্থরা। 

তাদের বাড়ির উঠানজুড়ে মরিচের ঝাঁজালো ঘ্রাণ। মাঠ-ঘাট, পুকুরঘাট, সাকুল মাঠ, ঈদগাহ মাঠ সর্বত্র এখন মরিচ শুকানোর ধুম পড়েছে। কৃষক-কিষানিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মরিচ শুকানোর কাজে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে দেশি জাতসহ বাঁশ গাইয়া, জিরা, মল্লিকা, বিন্দু, হট মাস্টারসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের মরিচের চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে ১ হাজার ৩২২ হেক্টরের মরিচ এরই মধ্যে কাটা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ১ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আলমগীর কবীর বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ বছর মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ও জলবায়ু মরিচ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এখানকার মরিচের রং গাঢ়, ঝাঁজ বেশি বাজারে দারুণ কদর পাচ্ছে। এ বছর দাম বর্তমানে কম থাকলেও কিছুদিন পর তা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Link copied!