শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম

তৈয়ব আলীর হাতের জাদুতে মাতোয়ারা ক্রেতা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম

মুয়াজ্জিন তৈয়ব আলীর হাতের জাদুতে মাতোয়ারা ক্রেতা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মুয়াজ্জিন তৈয়ব আলীর হাতের জাদুতে মাতোয়ারা ক্রেতা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গরু-খাসি জবাই করে মাংস বিক্রি সর্বত্র করা হলেও রান্না করে মাংস বিক্রি করার খবর তেমন একটা শোনা যায় না। কিন্তু ঠাকুরগাঁও শহরে গরু জবাই করে বড় বড় হাঁড়িতে বিয়েবাড়ির আদলে মাংস রান্না করে কেজিদরে বিক্রি করার এক অনন্য দোকান গড়ে উঠেছে। প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা হতে চলে ওই দোকানে কেনাবেচা—চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। এখানে হাজির হলেই মাংস কেনা যায় না। ক্রেতাচাহিদার কারণে এখানে আগে থেকে সিরিয়াল দিতে হয়। সিরিয়াল অনুযায়ী মাংস তুলে দেওয়া হয় ভোক্তাদের হাতে।

ঠাকুরগাঁও শহরের বিসিক শিল্পনগরী মসজিদের মুয়াজ্জিন তৈয়ব আলী। বয়স ষাটোর্ধ্ব অনুমান করা যায়। একসময় বাবুর্চির কাজ করতেন। আশপাশে বিয়ের অনুষ্ঠানে রান্নার জন্য তার ডাক পড়ত। এখনো মাঝে মাঝে বিয়ে বাড়িতে রান্নার জন্য তার ডাক পড়ে। বাবুর্চি হিসেবে তার নামডাক থাকায় পরিচিতজনদের অনুরোধে ৭ সপ্তাহ আগে বাজার থেকে মাংস কিনে এনে শুরু করেন রান্না করা মাংস বিক্রির আয়োজন। নিমেষেই বিক্রি হয়ে যায় সমস্ত মাংস। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্রেতাদের চাহিদা দিনদিন বাড়তে থাকায় তিনি মাংসের পরিমাণ বাড়াতে থাকেন।

পরবর্তীতে বাজার থেকে গরু কিনে এনে চিকিৎসক দ্বারা শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে মসজিদের পাশে জবাই করে নিজে রান্না করতে থাকেন। প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তিনি গরু জবাই দেন। গতকাল বৃহস্পতিবারও (০৬ নভেম্বর) একই নিয়মে গরু জবাই দেওয়া হয়। মাংস কাটা শেষে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে শুরু করেন রান্নার কাজ।

সকাল ৭টার দিকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকলে শুরু করেন রান্না করার মাংস বিক্রির কার্যক্রম। অস্থায়ী এই দোকানে টেবিল বসিয়ে এবং ওপরে শামিয়ানা দিয়ে সাজানো হয় দোকান। রান্না করা মাংস বিক্রির জন্য তৈয়ব আলী বাজার থেকে প্লাষ্টিকের ওয়ান টাইম বাটি কিনে সেখানে মাংস তুলে সাজিয়ে রাখেন। সাজানো ওসব বাটি ওজন করে তুলে দেওয়া হয় ভোক্তাদের হাতে। তবে এ মাংসের ঝোল নেই বললেই চলে। ভুনা করা মাংস এখানে বিক্রি করা হয়। ক্রেতাদের বেশির ভাগই ঠাকুরগাও জেলার বাসিন্দা। দিনাজপুর-পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দাও আসেন মাংসের স্বাদ নেওয়ার জন্য।

শুরুতে প্রতিকেজি মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও আজ শুক্রবার প্রতিকেজি মাংস ৮৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। এ সময় অকস্মাৎ মাংসের দাম বৃদ্ধি করায় অনেক ভোক্তাকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

পুরোনো ভোক্তারা জানান, তৈয়ব আলীর রান্না করা মাংসের অনেক স্বাদ। বিয়েবাড়ির মাংসের মতো স্বাদ। একটুতেই তৃপ্তি পাওয়া যায়। তা ছাড়া বাজার থেকে মাংস কিনে এনে বাসায় রান্না করা অনেক ঝামেলা। সেই তুলনায় রান্না করা মাংস বাসায় নিয়ে গেলে গিন্নিরা খুশি হয়। এই রান্নার স্বাদ একবার নিলে ভুলা যায় না।

অপরদিকে পুরোনো ক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক নতুন ভোক্তাকে মাংস কিনতে দেখা যায়। তারা জানান, এখানকার মাংসের নাকি খুব স্বাদ। অনেকটা বিয়েবাড়ির রান্না করা মাংসের মতো। তাই স্বাদ যাচাই করার জন্য এখানে মাংস কিনতে আসা।

মাংস বিক্রেতা তৈয়ব আলী জানান, ‘তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বাবুর্চির কাজ করি। রান্নার স্বাদে মাতোয়ারা ভোক্তাদের চাপের মুখে বিসিক মসজিদের পাশে রান্না করা মাংসের দোকান শুরু করি। প্রথম সপ্তাহে রান্না করেছিলাম ৫০ কেজি। এখন প্রতি শুক্রবার একটি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করি। তাও অনেক ক্রেতা খালি হাতে ফিরে যায়।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!