বিশ্ববাণিজ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশসহ বহু দেশ এতে চাপে পড়েছে। এই পটভূমিতে শুল্ক ইস্যুতে ওয়াশিংটনে ফের আলোচনায় বসেছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তি শুল্ক সংক্রান্ত দ্বিতীয় দফার আলোচনা বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল আশাবাদী, আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শুল্ক হার থেকে কিছুটা ছাড় পাওয়া যাবে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে সকাল ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা) যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। এ আলোচনা শুক্রবারও চলবে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিনের আলোচনায় বিশেষ করে গুরুত্ব পেয়েছে দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ইউএসটিআর, কৃষি, শ্রম, পরিবেশ, অর্থনীতি, মেধাস্বত্ব ও বিনিয়োগ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান (ভার্চুয়ালি), তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকমবিষয়ক উপদেষ্টা ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, এবং ওয়াশিংটনে অবস্থানরত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
এর আগে, দেশি শিল্প সুরক্ষার যুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের ২ এপ্রিল বাংলাদেশসহ শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এতে বাংলাদেশি রপ্তানিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব আসে, যা বিদ্যমান গড় ১৫ শতাংশের সঙ্গে মিলে দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুললেও ট্রাম্প তার শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা ৯ জুলাই থেকে পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করেন। আলোচনার সুযোগ দিতে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে চিঠি দেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, ‘যেসব দেশ ছাড় দিতে প্রস্তুত, তাদের প্রতি আমরা নমনীয় হবো।’
প্রথম দফার আলোচনায় তেমন অগ্রগতি না হলেও নতুন দফার আলোচনায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। প্রতিনিধিরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র শেষ মুহূর্তে হলেও অবস্থান নমনীয় করবে এবং বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধাক্কা এড়ানো যাবে।
আলোচনার ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে আগামী মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কতটা ব্যয়বহুল হবে, আর কতটা টিকে থাকতে পারবে এ দেশের অর্থনীতি।
আপনার মতামত লিখুন :