ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আমদানির ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে আসবে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
রোববার (১৭ আগস্ট) ভারত থেকে তিনটি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১৪৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজবাহী পাঁচটি ট্রাক দেশে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় আমদানিকারকেরা।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়েও পেঁয়াজ আমদানির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার বিকেলে রেবতী কুমার বিশ্বাসের মালিকানাধীন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অয়ন ট্রেডার্স দুই ট্রাক ভর্তি মোট ৫০ টন ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে এনেছে। এ ছাড়া ভারতের ঘোজাডাঙা বন্দরে আরও ১৪টি ট্রাক পেঁয়াজবাহী অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ এসেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৭টি ট্রাকে মোট ৭৭৯ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবারও চারটি ট্রাকে ১০০ টন পেঁয়াজ একই বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে।
আমদানিকারকদের মতে, বাজারে অস্থিরতা রোধে সরকার দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এর ফলে দেশে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি হওয়ার সুযোগ কমবে। সরবরাহ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে গিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে বলে আশাবাদী তারা। পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কয়েক দিন বিপাকে পড়েছিলেন।
রাজধানীর খিলগাঁও বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মাসুম হোসেন বলেন, ‘দিন দিন সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। তার ওপর হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম এত বাড়ায় সমস্যায় পড়েছিলাম। দুই দিন আগে কেজিতে ৭৫ টাকা দিয়ে কিনেছি, আজ একই পেঁয়াজ ৬৫ টাকায় কিনতে পারলাম। দাম আরও কমলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য বড় স্বস্তি হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছেও এ প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আবু তাহের জানান, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবর ছড়ানোর পরপরই দাম কমতে শুরু করেছে। দুই দিন আগে পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ একই পেঁয়াজ পাইকারিতে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানে কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। আমরা কম দামে কিনলে অবশ্যই কম দামে বিক্রি করব।’
বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ভারত থেকে যদি নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ তৈরি হবে। এতে দাম আরও কমে আসবে এবং সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবে