সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

তিন বছরে দারিদ্র্য বেড়েছে ২৮ শতাংশ, অতি দারিদ্র্য দ্বিগুণ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের লোগো।  ছবি- সংগৃহীত

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

দেশে দারিদ্র্যের হার গত তিন বছরের ব্যবধানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ, এই সময়ে প্রায় ১০ শতাংশ পয়েন্ট হারে দারিদ্র্য বেড়েছে।

সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরে। গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’। পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন।

অতি দারিদ্র্যও বেড়ে ৯.৩৫ শতাংশ

গবেষণা অনুযায়ী, শুধু সাধারণ দারিদ্র্যই নয়, অতি দারিদ্র্যের হারও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। ২০২২ সালে যেখানে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২৫ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে। এর মানে, এখনো প্রায় ১৮ শতাংশ পরিবার রয়েছে দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে- যেকোনো সময় এদের দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনটি বড় সংকট দায়ী

পিপিআরসির মতে, দেশে বর্তমানে তিনটি বড় সংকট একসঙ্গে বিরাজ করছে, যা দারিদ্র্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এগুলো হলো- কোভিড-১৯ এর প্রভাব (২০২০-২০২২), চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। এসব সংকট পরিবারের আয় কমিয়ে দিয়েছে, ব্যয় বাড়িয়েছে এবং সঞ্চয় করার সুযোগ সংকুচিত করেছে।

ঘুষ কমলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি

গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছরের আগস্টের আগে সেবা নিতে ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ মানুষ ঘুষ দিয়েছেন, যা আগস্টের পর কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে। তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ঘুষের প্রবণতা। সরকারি অফিস, পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের ঘিরেই ঘুষ লেনদেনের ঘটনা বেশি ঘটছে।

শহরের পরিবারে আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে

পিপিআরসির তথ্য বলছে, শহরের পরিবারগুলো তিন বছরে মাসিক গড় আয় হারিয়েছে ৫ হাজার টাকা। ২০২২ সালে যেখানে মাসিক গড় আয় ছিল ৪৫ হাজার ৫৭৮ টাকা, বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৪০ হাজার ৫৭৮ টাকায়। বিপরীতে, মাসিক খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকায়। ফলে শহরের পরিবারগুলো ঘাটতিতে পড়ছে।

অন্যদিকে, গ্রামের পরিবারগুলোর গড় আয় কিছুটা বেড়েছে। ২০২২ সালে গ্রামে গড় আয় ছিল ২৬ হাজার ১৬৩ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ২০৫ টাকা। তবে ব্যয় ২৭ হাজার ১৬২ টাকায় দাঁড়ানোয় সঞ্চয়ের সুযোগ খুব সীমিত।

জাতীয় গড় আয় ও খরচ প্রায় সমান

গবেষণা অনুযায়ী, সার্বিকভাবে একটি পরিবারের মাসিক গড় আয় ৩২ হাজার ৬৮৫ টাকা, আর খরচ ৩২ হাজার ৬১৫ টাকা। অর্থাৎ, পরিবারগুলোর হাতে সঞ্চয়ের জন্য প্রায় কিছুই থাকছে না।

খাবারে খরচই অর্ধেকের বেশি

একটি পরিবারের মাসিক মোট খরচের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ- প্রায় ৫৫ শতাংশ- যাচ্ছে শুধু খাবার কেনায়। গড়ে প্রতিটি পরিবার মাসে ১০ হাজার ৬১৪ টাকা ব্যয় করছে খাদ্যে। বাকি ব্যয় হচ্ছে শিক্ষায় ১,৮২২ টাকা, চিকিৎসায় ১,৫৫৬ টাকা, যাতায়াতে ১,৪৭৮ এবং আবাসনে ১,০৮৯ টাকা।

পাঁচটি নতুন ঝুঁকি চিহ্নিত

গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এখন পাঁচটি নতুন ঝুঁকির বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, দীর্ঘস্থায়ী রোগের বোঝা বাড়ছে, এর জন্য নতুন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দরকার। দ্বিতীয়ত, নারীপ্রধান পরিবারগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে, যাদের আলাদা সহায়তা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, ঋণের চাপ বাড়ছে, যা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চতুর্থত, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য বড় উদ্বেগ। পঞ্চমত, এখনো ৩৬ শতাংশ মানুষ নন-স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহার করছে, যা নিরাপদ স্যানিটেশনের বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, দেশে কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বেকারত্ব এখন এক ধরনের দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় এখনই বড় ধরনের উদ্যোগ এবং কার্যকর নীতিমালা প্রয়োজন।

Link copied!