শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

ক্রেডিট কার্ডের ইতিহাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

ক্রেডিট কার্ডের ইতিহাস

ছবি: সংগৃহীত

১৮৮৭ সালে এডওয়ার্ড বেল্যামি তার ‘লুকিং ব্যাকওয়ার্ড’ উপন্যাসে প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। উপন্যাসে ‘ক্রেডিট কার্ড’ শব্দটি ১১ বার ব্যবহার করেন তিনি। তবে বাস্তবে ক্রেডিট কার্ডের যাত্রা শুরু ১৯২৮ সালের দিকে। ‘দ্য চারগা প্লেট’ নামে এক আয়তাকার ধাতব পাত বানানো হয়। 

১৯৩৪ সালে ‘আমেরিকান এয়ারলাইনস’ ও ‘এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন’ বিমানের টিকিট সহজ করতে বাই নাও পে লেটার সুবিধার মাধ্যমে ট্রাভেল কার্ডের পরিচয় করিয়ে দেয়। ১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করতে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী ফ্রাঙ্ক ম্যাকনামারা। 

কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার পর বিল পরিশোধের সময় ভদ্রলোক বুঝতে পারলেন ভুল করে ওয়ালেট বা মানিব্যাগ আনেননি। তখন তিনি খাবারের বিল পরে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতিতে রেস্তোরাঁটির সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেন। তবে এমন কথাও প্রচলিত আছে, ম্যাকনামারা তার স্ত্রীকে কিছু নগদ অর্থ নিয়ে রেস্তোরাঁয় আসতে বলেছিলেন।

বিব্রতকর এ অভিজ্ঞতা থেকেই ম্যাকনামারার মাথায় এল নগদ অর্থ ছাড়া কীভাবে বিল পরিশোধ করা যায়। ব্যস, একটি দারুণ ধারণা এসে গেল তার মাথায়, কার্ডের মাধ্যমে তো কাজটি করা যেতে পারে। ম্যাকনামারা ১৯৫০ সালে রালফ স্নেইডার নামে আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন প্রথম ক্রেডিট কার্ড ‘দ্য ডাইনারস ক্লাব’। 

এ কোম্পানি চালুর অন্যতম মূলমন্ত্র ছিল, ‘এখন চুক্তি সই, পরে বিল পরিশোধ’। সে আলোকে নিউইয়র্ক শহরের ২৭টি রেস্তোরাঁর সঙ্গে চুক্তি হলো ম্যাকনামারার। বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মিলিয়ে ২০০ ব্যক্তি দ্য ডাইনারস ক্লাবের সদস্য হলেন। এরপর সদস্যরা চুক্তিবদ্ধ রেস্তোরাঁগুলোয় আগে খেয়ে পরে বিল দিতেন।

ডাইনারস ক্লাব বার্ষিক ৩ ডলার ফি’র বিনিময়ে সদস্যপদ দিত এবং রেস্তোরাঁর কাছ থেকে প্রতিটি বিলের বিপরীতে ৭ শতাংশ ফি নিত। এটি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।

ক্রেডিট কার্ডের পরবর্তী গল্প বিস্তৃতির। ১৯৫৮ সালে ব্যাংক অব আমেরিকা ‘ব্যাংক এমেরিকার্ড’ নামে ক্রেডিট কার্ড বাজারে আনে। ১৯৬৬ সালে আসে মাস্টার চার্চ নামে একটি কার্ড, বর্তমানে যা মাস্টারকার্ড নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে ‘ব্যাংক এমেরিকার্ড’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘ভিসা’ রাখা হয়। এ দুই কার্ড এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বময়। আশির দশকে ক্রেডিট কার্ডে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ ও নব্বই দশকে কার্ডে ইএমবি চিপ টেকনোলজি যোগ করা হয়। ধীরে ধীরে প্রযুক্তিগত বিবর্তনের মাধ্যমে আজকের রূপ গ্রহণ করেছে।

উন্নত বিশ্বে আধুনিক ক্রেডিট কার্ড প্রচলনের প্রায় অর্ধশতাব্দীর পর বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড আসে। ১৯৯৬ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রথম এ দেশে ক্রেডিট কার্ড চালু করে। ওই সময়ে তৎকালীন ‘বণিক বাংলাদেশ’ (বর্তমানে লংকাবাংলা) চালু করে সেবাটি। বর্তমানে দেশের প্রায় ৪০টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। 

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৭৪ হাজার। ব্যাংক কার্ডগুলো সাধারণত প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়। নির্দিষ্ট কতগুলো ব্যাংক এ কার্ড ইস্যু করে। তবে নির্দিষ্ট ব্যাংক ছাড়াও কিছু কোম্পানি তাদের ক্লায়েন্টদের অর্থনৈতিক লেনদেন সম্পর্কিত নানাবিধ সেবা প্রদানের জন্য কার্ড ইস্যু করে। 

ব্যাংক কার্ডে তথ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্লায়েন্টের নাম, ইস্যুয়ারের নাম, ইউনিক কার্ড নম্বরসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কার্ডের অন্যপাশে এক ধরনের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ বা ইলেকট্রনিক চিপ সংযুক্ত থাকে, যা থেকে মেশিনগুলো ডেটা গ্রহণ করে। প্রতিটি ব্যাংকেরই নির্দিষ্ট বিলিং সাইকেল পিরিয়ড থাকে। 

প্রতিটি বিলিং সাইকেল পিরিয়ড শেষে ব্যাংক কার্ডহোল্ডারকে একটি ‘ট্রানজেকশন হিস্ট্রি’ পাঠায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার ব্যবহৃত ক্রেডিট অ্যামাউন্ট পরিশোধ করতে বলে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করাকে গ্রেস পিরিয়ড বলা হয়। এ সময়সীমা সাধারণত ২১-২৫ দিনের মধ্যে হয়। তবে কিছু ব্যাংক এর থেকে বেশি সময়ও দিয়ে থাকে। এ গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যে যদি গ্রাহক সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিতে পারে, তবে ব্যাংক ইউজারকে কোনো ইন্টারেস্ট চার্জ করে না।

কার্ডের বিল থেকে ‘স্টেটমেন্ট ব্যালান্স’, ‘কারেন্ট ব্যালান্স’, ‘মিনিমাম ডিউ’ এ তিনটির যেকোনো একটি পরিশোধ করা যায়। স্টেটমেন্ট ব্যালান্স হলো কার্ড ব্যবহার করে খরচ করা সম্পূর্ণ অর্থের পরিমাণ। কারেন্ট ব্যালান্স হলো শুধু শেষ বিলিং সাইকেলেই ব্যবহারকারীর ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ।

 আর মিনিমাম ডিউ হলো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে নির্ধারণ করা সর্বনিম্ন অর্থের পরিমাণ, যা সাধারণত স্টেটমেন্ট ব্যালান্সের ১-৩ শতাংশ হয়। খেলাপি এড়াতে গ্রাহককে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়, আর অবশিষ্ট বিল পরবর্তী বিলিং সাইকেলের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। 

এক্ষেত্রে গ্রাহককে অবশিষ্ট অ্যামাউন্টের জন্য সুদ গুনতে হয়। সুদের ঝামেলা এড়াতে চাইলে বিলের গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যে সম্পূর্ণ স্টেটমেন্ট ব্যালান্স অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। অন্যান্য লোনের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের সুদহার বেশি, কারণ ক্রেডিট কার্ড কোনো প্রকার জামানত ছাড়াই গ্রাহককে লোন প্রদান করে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!