রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রশাসনের গড়িমসি

আরিফুজ্জামান কোরবান, রাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ০২:২২ পিএম

রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল নিয়ে ধোঁয়াশা,  প্রশাসনের গড়িমসি

ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক ১ম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে সমালোচিত একটি বিষয় পোষ্য কোটা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানালেও গত জুলাই বিপ্লবের পর এই দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। গত ১৩ নভেম্বর ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানায়। এই দাবির প্রেক্ষিতে ১৪ নভেম্বর প্রায় ৭ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। পরবর্তীতে রাবি প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। যদিও প্রশাসন থেকে ১ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত

জানানোর কথা ছিল তবে ১৫ দিনেও পোষ্য কোটা বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

এ বিষয়ে কথা হয় রাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ফরিদ উদ্দিন খানের সাথে। তিনি জানান, পোষ্য কোটা থাকবে কিনা সেটি নিয়ে একটি রিভিউ কমিটি করা হয়েছে। রিভিউ কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসন এবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে বলেও জানান তিনি।

পোষ্য কোটার সুবিধা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সন্তানরা পেয়ে থাকেন। এই কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাশ করার নিয়ম থাকলেও অতীতে নানা সময়ে অসংগতি ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ভর্তির অভিযোগ উঠেছে।

পোষ্য কোটা বাতিল প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, কোটা ব্যবস্থা রাখা হয় সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে সামনের সারিতে এগিয়ে আনতে। কিন্তু বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোনদিক থেকে পিছিয়ে পড়া কাতারে পড়েন, আমি জানি না। একজন রিক্সাচালক কিংবা দিনমজুরের সন্তানের নির্ঘুম রাত কোটা চাওয়া এসব শিক্ষকদের চোখে পড়ে না। এর কারণ হয়তো, তারা আগের মতোই তাদের আলালের ঘরের দুলালদের বাবা-মা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানানোর স্বপ্ন দেখেন। আর এই পথ সুগম করতেই সন্তানদের টেনেটুনে ভর্তিযুদ্ধকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকানোর চেষ্টা। এক কোটা বৈষম্য থেকেই স্বৈরাচার পতন আন্দোলন ও পতন, বিষয়টি আমার মহান শিক্ষকদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদার বলেন, বিশ্বাবিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষায় অনেক বড় প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয় পরিক্ষার্থীদের। তাদের মধ্যে ২-৩% পরিক্ষার্থী রাবিতে ভর্তির সুযোগ পায়। এত জটিলতার মধ্যে কোন সুবিধাবাদী জনগোষ্ঠী থাকা উচিৎ নয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এসে কোটা পদ্ধতি চালু থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এভাবে কালক্ষেপণ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, পোষ্য কোটা থাকবে নাকি বাতিল হবে এ বিষয়ে রিভিউ কমিটি ইতোমধ্যে পাঁচ দফা মিটিং করেছে। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। রিভিউ কমিটির চূড়ান্ত সুপারিশ আসলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা ফলাফল দিতে সক্ষম হব।

আরবি/ এইচএম

Link copied!