বাংলাদেশের ইতিহাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিকে পুনর্জাগরিত করতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সোমবার (১৪ জুলাই) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজন করা হচ্ছে ‘জুলাই ওমেন্স ডে’ উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের। এতে থাকবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, গান ও আলো-আবেশের ‘ড্রোন শো’।
অনুষ্ঠানটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। সম্মিলিতভাবে সংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কণ্ঠশিল্পী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সায়ান। এ সময় এই শিল্পিী পরিবেশন করবেন তার জনপ্রিয় গানগুলো, যেমন- ‘আমিই বাংলাদেশ’, ‘জয় বাংলার’, ‘হুশিয়ারি’, ‘তাজ্জব বনে যাই’, ‘আমার নাম প্যালেস্টাইন’ ও ‘আমি জুলাই এর গল্প বলবো’।
এরপর পর্যায়ক্রমে প্রদর্শিত হবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র, এবং দুটি চলচ্চিত্র- ‘দীপক কুমার গোস্বামী স্পিকিং’ ও ‘জুলাই বিষাদ সিন্ধু’।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী পাঁচজন যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের তিনজন সদস্য স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেবেন।
রাত ৮টার পরপরই সাংগঠনিক পরিবেশনায় অংশ নেবে ব্যান্ডদল ‘ইলা লা লা’।
এরপর মঞ্চে আসবেন ‘স্লোগান গার্লরা’, যারা জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে শক্তিশালী স্লোগানে উজ্জীবিত করবেন উপস্থিত জনতাকে। পরে ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ পরিবেশন করবে ‘আলো আসবেই’, ‘মুক্তি’, ‘ডাহুক’ ও ‘মেয়ে’ গানগুলো।
স্লোগান গার্লরা মঞ্চে এসে স্লোগান দেওয়ার পর পারসা মাহজাবীন পূর্ণি ‘চলো ভুলে যাই’, ‘মুক্তির মন্দির’ ও ‘মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম’ গান পরিবেশন করবেন।
এরপর স্লোগান গার্লদের স্লোগানের পর ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’, ‘পলাশীর প্রান্তর’, ‘ঘুরে দাঁড়াও’ ও ‘বাংলাদেশ’ গানসমূহ পরিবেশন করবেন শিল্পী এলিটা করিম।
রাত ১০টায় শুরু হবে অনুষ্ঠানটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ- ‘মিউজিক্যাল ড্রোন শো’। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে ‘দুই হাজার ড্রোন’ উড্ডয়নের মাধ্যমে আকাশে তুলে ধরা হবে ‘জুলাইয়ের গল্প’।
ড্রোন শো’টি দুই ধাপে উপস্থাপন করা হবে- প্রথম ধাপে, বাংলাদেশ কেমন করে জুলাইয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় ধাপে, ১৪ জুলাই হল থেকে ঢাবির ছাত্রীদের স্রোতের মতো বেরিয়ে আসা ও আন্দোলনের জোয়ারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূচনার মুহূর্ত।
এই অনুষ্ঠানের সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এটি শুধু সাংস্কৃতিক নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক চেতনার জাগরণ- আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগ ও নারীর ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে এই আয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :