জুলাই সনদ ও ঘোষণাকে আইনি স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে জুলাই যোদ্ধারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে তারা অবরোধ শুরু করলে বিকেল পর্যন্ত এলাকা যান চলাচলের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাক্কাধাক্কি ও বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে চাইলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনে অংশ নেন ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তি ও নিহত শহিদদের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, ‘জুলাই সনদ’ এবং ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে’ সাংবিধানিক ও আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা আন্দোলনকারী মো. মিজান বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের ঘেরা ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে গেলে আমরা বাধা দিই। এ সময় তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।’
অবরোধে অংশ নেওয়া আবু হাসান বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হবে তাদের কর্মসূচি চলবে।
এ সময় তারা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে ‘ স্লোগান দিতে থাকেন।
এ বিষয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা শুধু ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়েছি, কাউকে বাধা দিইনি বা কর্মসূচি বন্ধ করতে বলিনি। কিন্তু ব্যারিকেড সরানোতেই তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।’
অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, জুলাই শহিদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি, শহিদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা, শহিদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা, আহতদের সকল চিকিৎসা, পুনর্বাসন।
কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা, আহত ও শহিদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা, শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তা কেন্দ্র গঠন করা, শহিদ ও আহতদের ওপর সংঘটিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকার্য সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।
জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। সনদের এ বিষয়টি নিয়েই মূলত আপত্তি।
দলগুলো বলছে, জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে তা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে। না হলে পুরো সংস্কারপ্রক্রিয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। তবে এ খসড়ার সঙ্গে মোটামুটি একমত বিএনপি।