বাজারে মৌসুমি সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কমেনি দাম। সবজির পাশাপাশি বাজারে বেড়েছে সবধরণের মাছের দাম। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে এসে রীতিমতো হা-হুতাশ করছে সাধারণ ক্রেতারা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালী ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা, পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি ১২০ টাকা, আদা কেজি প্রতি ১৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, রসুন কেজি প্রতি ২০০ টাকা, ফুল কপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বেগুন কেজি প্রতি ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল কেজি প্রতি ৫০ টাকা, সিম কেজি প্রতি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, শসা কেজি প্রতি ৮০ টাকা, টমেটো কেজি প্রতি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা আকমল হোসেন নামে একজন ক্রেতা বলেন, শীত আসলে সবজির দাম কমে যাওয়ার কথা, কিন্তু এবার উল্টো। আগে যেসব সবজি এক কেজি করে কিনতাম, এখন দাম বেশি হওয়ায় অর্ধেক পরিমাণ কিনতে হচ্ছে। পরিবারের বাজেট সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের গাছ নষ্ট হয়েছে। অনেক জায়গায় শিম, বেগুন, ঝিঙা ও অন্যান্য সবজির ক্ষতি হয়েছে। ফলন কমে যাওয়ায় বাজারে সবজি তুলনামূলক কম উঠছে।
তিনি বলেন, পাইকারের থেকে সবজি বাজারে এসে কয়েক ধাপে হাতবদল হয়। প্রতিটি ধাপেই কিছুটা করে দাম বাড়ে, ফলে খুচরা পর্যায়ে এসে দাম আরও বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সোনালী প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, প্রতি কেজি রুই মাছ (মাঝারি) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কই মাছ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, প্রতি কেজি চাষের শিং ৪৫০ টাকা, প্রতি কেজি তেলাপিয়া আকার ভেদে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বড় চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙাস প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, শোল প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, টেংড়া প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মলা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালী কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসেন এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. সায়েদুল আলম। তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম ওঠে-নামে, কমবেশি হয়, তবে মাছের দাম একেবারেই কমে না। কোনো সময় মাছের দাম কমে যেতে দেখলাম না। একই রকম দামে সব সময় মাছ বিক্রি হয়। পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, চাষের কই মাছ ছাড়া অন্য সব ধরনের মাছের দাম অতিরিক্ত বেশি। এত বেশি দাম দিয়ে মাছ কিনে খাওয়া যায় না।
বিক্রেতারা বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু মাছের দাম কমলেও, বেশিরভাগ মাছের দাম আগের মতোই রয়ে গেছে। মূলত মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধি হওয়ার পর থেকে বাজারে মাছের দাম বেড়েছে। এরপর থেকে মাছের দাম সেভাবে আর কমেনি। মূলত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় মাছ আসে, সেই মাছের পরিবহন খরচ, অন্যান্য খরচ সব মিলিয়ে মাছ চাষিরা আড়তে বিক্রি করে যায়। এরপর কয় হাত ঘুরে মাছ সাধারণ ক্রেতাদের কাছে আসে, সবকিছু মিলিয়ে মাছের দাম বাড়তি যায় বাজারে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন