পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের কাগজি টোলা এলাকায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হওয়া একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের সবাই মারা গেছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিপন পেয়াদা (৩৫)।
এর আগে রিপনের তিন সন্তান আয়েশা (১), রোকন পেয়াদা (১৪) এবং তামিম পেয়াদা (১৬) একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার স্ত্রী চাঁদনী (২৮) মারা যান গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে নেওয়ার পথে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার ভোরে সূত্রাপুর এলাকা থেকে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য, মো. রিপন (৩৫), তাঁর স্ত্রী চাঁদনী (২৮), এবং সন্তান তামিম (২২), রোকন (১৪) ও আয়েশা (১) দগ্ধ অবস্থায় আমাদের ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন।’
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবা রিপন। আগুনে তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ৪৫ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই হাসপাতাল ছেড়ে যান রিপনের স্ত্রী চাঁদনী। তিনি ‘ডিসচার্জ অন রিকোয়েস্ট বাই গার্ডিয়ান’ নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থাও ছিল আশঙ্কাজনক।
দগ্ধ রিপনের মামা জাকির হোসেন জানান, আমার ভাগ্নে পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পরিবারসহ ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ ঘরে বিকট বিস্ফোরণ হয়। আমরা ধারণা করছি, গ্যাস লিকেজ থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় আমার ভাগ্নের তিন সন্তান এবং গতরাতে ভাগ্নে রিপন মারা গেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রিপনের স্ত্রী চাঁদনী পরিবারের জিম্মায় হাসপাতাল থেকে চলে গেলেও তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।’
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই রাত আনুমানিক ১টার দিকে ওই বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে পরিবারের পাঁচ সদস্যই দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে আয়েশার শরীরের ৬৩ শতাংশ, রোকনের ৬০ শতাংশ, তামিমের ৪২ শতাংশ, চাঁদনীর ৪৫ শতাংশ এবং রিপনের শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :