মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াকফিউতে ছয় দিন ধরে লাগাতার সংঘর্ষ চলছে। জান্তা বাহিনীর একটি নৌঘাঁটির কাছে সামরিক চৌকি ঘিরে রেখেছে আরাকান আর্মি। সেনা চৌকিটি জান্তার নৌঘাঁটি থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। বিশ্লেষকদের ধারণা, আরাকান আর্মির হাতে এই নৌঘাঁটির পতন হলে ভেঙে পড়তে পারে জান্তা সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যব্স্থা।
এদিকে উত্তরের শান রাজ্যে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছেছে জান্তা বাহিনী। দীর্ঘ অভিযানের পর রাজ্যের একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে সেনারা। এই শহরটি মান্দালয়-লাশিও-মুসে বাণিজ্যপথের প্রবেশদ্বার। মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে জান্তা বাহিনী ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে। বাকি তিন এলাকায় চলছে তীব্র লড়াই।
দেশটিতে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে চীন। জান্তা সমর্থিত দলগুলোকে একের পর এক আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বেইজিং। এটিকে সামরিক সরকারকে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পরিকল্পনারই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানায়, সম্প্রতি জান্তা সরকারের কাছে বহু নতুন ড্রোন এসেছে চীন থেকে। চীনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রোন অপারেটরও এসেছে দেশটিতে। যা মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে সংঘাতের।
ইরাবতীর দাবি, ভোটে কীভাবে ‘নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র’ কায়েম করা যায়, তা শিখিয়ে দিচ্ছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তবে চীনের এই প্রচেষ্টা নির্বাচনী পরিবেশের জন্য স্বাভাবিক নয়, বরং জান্তা সরকারের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পরিকল্পনারই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংঘর্ষ ও জান্তা বাহিনীর এলোমেলো বোমাবর্ষণের কারণে ৪০টি গ্রামের ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। রাখাইনে এখন শুধু তিনটি শহর– রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে ও মানাউংসহ জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এরই মধ্যে তারা প্রতিবেশী মগওয়ে, বাগো ও আয়েয়ারওয়াদ্দি অঞ্চলেও অভিযান চালিয়ে সরকারের কাছ থেকে আরও নতুন নতুন এলাকা দখলে নিচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :