অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা তাঁদের চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। প্রায় ৩৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন তাঁরা।
অনশনকারী চারুকলার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান সোহেল বলেন, “রাত ১১টায় আমাদের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানানো হলে আমরা তাতে একমত পোষণ করি। আমরা চেয়েছিলাম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত। তবে সে সিদ্ধান্তে যে তারিখ দেবে না সেটা ভাবিনি। তবে সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা ক্যাম্পাসে ফিরব এটা নিশ্চিত।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন বলেন, ‘চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমাবর্তনের পর এটি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনকেও জানিয়ে দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক করে গঠন করা হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এখন এর অবস্থান। ২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চলে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি জানান। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের ১০০তম দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা ও হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সেশনজট কমাতে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এরপর বিভিন্ন সময়ে এই দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে আবারও আন্দোলন নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ১২ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই চারুকলা ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। তবে এই প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখায় মঙ্গলবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।