ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পেয়েছে কুমিল্লার খাদি কাপড়। কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদিসহ আরও ২৪টি পণ্যকে জিআই সনদ দিয়েছে সরকার।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসের আলোচনা সভায় এসব সনদ হস্তান্তর করা হয়।
খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হলো, এটি হাতে তৈরি, পরিবেশবান্ধব এবং আরামদায়ক। কুমিল্লার কারিগররা তাদের অনন্য দক্ষতার মাধ্যমে খাদিকে একটি শিল্পে রূপান্তরিত করেছেন।
কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে রাজগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি খাদি পোশাকের দোকান রয়েছে।
কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া জানান, কুমিল্লার খাদি বর্তমানে দেশ-বিদেশে শৈল্পিক নকশার কারণে প্রশংসিত। ঐতিহ্যবাহী খাদিতে এখন আধুনিকতা ও নান্দনিকতার মেলবন্ধন ঘটেছে।
তিনি বলেন, শতাধিক বছরের পুরোনো খাদি এর আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য ছিল। তবে অবশেষে সেটি পাওয়া গেছে এবং এতে সবার মধ্যে আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।
নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (ব্রাকেটে সনদ নম্বর) হলো—নরসিংদীর লটকন (৩২), মধুপুরের আনারস (৩৩), ভোলার মহিষের দুধের কাঁচাদই (৩৪), মাগুরার হাজরাপুরী লিচু (৩৫), সিরাজগঞ্জের গামছা (৩৬), সিলেটের মণিপুরি শাড়ি (৩৭), মিরপুরের কাতান শাড়ি (৩৮), ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা (৩৯), কুমিল্লার খাদি (৪০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি (৪১), গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা (৪২), সুন্দরবনের মধু (৪৩), শেরপুরের ছানার পায়েস (৪৪), সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি (৪৫), গাজীপুরের কাঁঠাল (৪৬), কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান (৪৭), অষ্টগ্রামের পনির (৪৮), বরিশালের আমড়া (৪৯), কুমারখালীর বেডশিট (৫০), দিনাজপুরের বেদানা লিচু (৫১), মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর (৫২), নওগাঁর নাকফজলি আম (৫৩), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ (৫৪)।