শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বেরোবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৩:১৭ এএম

বেরোবিতে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও সক্রিয় শিবির-ছাত্রদল 

বেরোবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৩:১৭ এএম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কাগজে-কলমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। ক্যাম্পাসজুড়ে শিবির ও ছাত্রদলের বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসনের চোখের সামনেই শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

অথচ ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে। এরপর ২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল ১১১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন পায়। 

এতে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি আজীবন বহিষ্কার এবং ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশও করা হয়।

তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন দৃশ্য। গত ৯ জুলাই শিবির তাদের নতুন কমিটি ঘোষণা করে। যদিও পূর্বেও তাদের কার্যক্রম চলমান ছিল। এই কমিটির ঘোষণার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। 

অন্য দিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে দেদারসে। ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে খেলা উদ্বোধন করেন। ১৯ জুলাই কেন্দ্রীয় মসজিদে ‘শহিদদের স্মরণে’ দোয়া মাহফিল করে এবং ২০ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে সদস্য ফরম বিতরণ করে। 

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে  ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ মুসা, ও বিশেষ অতিথি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহ মো. আদনান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাইজুল খান উপস্থিত ছিল। এসব ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।

এদিকে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা পরিচালককে শাড়ি ও চুড়ি পরিয়ে দেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও প্রতিদিন কোনো না কোনো দলীয় কার্যক্রম হচ্ছে।আমরা আর চাই না আবার কেউ শহিদ আবু সাঈদের মতো কিংবা আবরার ফাহাদের মতো লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির নৃশংস বলি হউক। আমরা চাই সুস্থ ধারার ছাত্রসংসদ ভিত্তিক রাজনীতি  যা গণতন্ত্রের সহায়ক। আমরা আর কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনস্ত থাকতে চাই না।’

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী খোকন ইসলাম বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী প্রশাসন কেমন হওয়া উচিত ছিল? আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পেরেছেন তারা?বেরোবিতে চলমান সার্কাজমের দায় কেবল প্রশাসনের মেরুদণ্ডহীনতা নাকি সাধারণ শিক্ষার্থী গর্জে ওঠায় ধীরগতি? আর আন্দোলনের নেতৃত্ব সমন্বয়কদের প্রশাসনের প্রতি নমনীয়তাও দায়ী কিনা?’

রসায়ন বিভাগ বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আলী বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত সসম্মানে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখনও ধৈর্য ধারণ করে আছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে চিরকাল থাকবে এই ধৈর্য! প্রশাসন যে ব্যর্থ, তা বহুবার প্রমাণ হয়ে গেছে। ভিসি নিয়োগের জন্য আমরা যখন আন্দোলনে নেমেছিলাম, তখন স্পষ্ট করে ঘোষণা দিয়েছিলাম আমরা চাই একজন মেরুদণ্ডসম্পন্ন, যোগ্য ভিসি এবং একটি বলিষ্ঠ প্রশাসন। 

তিনি আরও বলেন, আইন পাশ করে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও, এখনো ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে চলছে সেই রাজনীতি। ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় গণদাবি ছিল লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। খজনক হলেও সত্য, এই গণদাবির প্রতি ন্যূনতম সম্মান দেখাতেও ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে ছাত্র রাজনীতি বারবার প্রমাণ করেছে— প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বিশ্ববিদ্যালয় সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের উপর। এমন প্রশাসনের থাকা না থাকা উভয়ই সমান।

এ বিষয়ে বেরোবির  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন  তার ফেসবুক  পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়ে আইন করেও যদি ব্যবস্থা না নিতে পারেন। তবে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। বিপ্লব উত্তর এসব চুড়ি পড়া প্রশাসন কে দেখতে বেরোবিয়ানরা প্রস্তুত নয়। কিছুদিন আগেও শিবির তাদের কমিটি প্রকাশ করলো। নামকাওয়াস্তে তদন্ত কমিটি করলেও তার কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি আমরা। এসব হটকারিতায় আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড.মো হুমায়ুন কবির চৌধুরি বলেন, ‘কোনো কিছু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে অবহিত করতে হবে। আর এটা পরবর্তী সিন্ডিকেটে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি শিক্ষার্থী এর মধ্যে ক্যাম্পাসের বাইরে যদি মিটিং মিছিল করে তাহলে এটা কি প্রশাসনের ধরা সম্ভব?’

ক্যাম্পাসের ভিতরে যদি প্রোগ্রাম করে এবং করছে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নজরে নেওয়া দরকার। যদি ক্যাম্পাসের মধ্যে করে থাকে তাহলে সিন্ডিকেটের আইন অনুযায়ী  সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড মো শওকত আলী বলেন, আমরা কেউ রাজনীতি চাই না। যারা রাজনীতি করতেছে তাদের সম্পর্কে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।তাদের নমুনা আমাদের কাছে আছে।যারা রানিং শিক্ষার্থী না আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না।যারা রানিং শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

Shera Lather
Link copied!