ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

সুপারিশ বঞ্চিতদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তি’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষিকা। ছবি- সংগৃহীত

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ অনেক প্রার্থী অভিযোগ তুলেছেন, তারা সমান যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

বিশেষ করে মাদ্রাসা পর্যায়ে হাজারো শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রার্থী আবেদন করেও সুপারিশ পাননি। এতে ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন।

তাদের দাবি, ১৭তম নিবন্ধনধারীরা একই সফটওয়্যারে কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি তিন স্তরে আবেদন করার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং সুপারিশও পেয়েছেন।

অথচ ১৮তম নিবন্ধনধারীদের সনদে কেবল কলেজ উল্লেখ থাকায় তারা মাদ্রাসায় আবেদন করেও সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে, যখন মাদ্রাসায় বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ রয়েছে, তখন যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে পদগুলো ফাঁকা রাখার যৌক্তিকতা কোথায়?

অভিযোগ প্রসঙ্গে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা জানান, সুপারিশ না পাওয়ার মূলত দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, প্রতিষ্ঠানের ভুল পদসংক্রান্ত তথ্য এবং দ্বিতীয়ত, প্রার্থীর সার্টিফিকেটজনিত সীমাবদ্ধতা।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান কারিগরির ২১৪ কোডের জায়গায় ভুলভাবে ২২৯ কোড ব্যবহার করেছেন। ফলে ওই চাহিদার সঙ্গে মেলানো যায়নি, এবং শেষ পর্যন্ত পদগুলো ফাঁকা থেকে গেছে।’

এ ছাড়া অনেক প্রার্থী স্কুল পর্যায়ে আবেদন করেছেন, অথচ তাদের সনদ কারিগরি শিক্ষার। এই ধরনের তথ্যগত অসঙ্গতির কারণে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।

কর্মকর্তা আরও জানান, সব ক্ষেত্রে আসন ও প্রার্থীর সংখ্যা সমান নয়। যেমন, বাংলা বিষয়ে প্রায় ৩ হাজার পদ থাকলেও উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ হাজার। বিপরীতে, ইংরেজি বিষয়ে পদ আছে ৮ হাজার, কিন্তু পাস করেছেন মাত্র ৩ হাজার।

একইভাবে মাদ্রাসার লেকচারার (আইসিটি) পদ রয়েছে ১ হাজার ২৬৩টি, অথচ উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ১৫৩ জন। ফলে একদিকে শূন্যপদ ফাঁকা রয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে যোগ্য প্রার্থীও সুপারিশ পাচ্ছেন না।

তবে প্রার্থীদের আশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সব উত্তীর্ণ প্রার্থী সুপারিশ পাক। তাই আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠকে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। যদি দেখা যায়, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থী ভুল চাহিদা বা কোড সমস্যার কারণে বঞ্চিত হয়েছেন, তাহলে তাদের জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতে পারে। এতে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ তৈরি হবে এবং তারা সুপারিশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’

কর্মকর্তা আরও স্পষ্ট করেন, বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল প্রার্থীদের নিবন্ধন সনদ, বিষয় ও পদ অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। অথচ অনেকেই সনদের বাইরে গিয়ে আবেদন করেছেন, যেটা গ্রহণযোগ্য হয়নি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি কোনো বৈষম্য নয়, বরং প্রার্থীদের তথ্যভিত্তিক অসঙ্গতি ও প্রতিষ্ঠানের ভুল চাহিদার কারণেই সুপারিশ আটকে গেছে। তবে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি এলে অনেক প্রার্থী নতুন করে সুযোগ পাবেন।’