ঢাকা সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

‘ফটোসেশন নয়, চিকিৎসার অংশ হিসেবেই মামুনকে হাঁটানো হয়েছে’

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
শনিবার রাতে আহত শিক্ষার্থী মামুন মিয়াকে হাঁটানো হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন শিক্ষার্থী মামুন মিয়া। অস্ত্রোপচারের পর তাকে হাঁটানো হয়। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেন।

তবে এটিকে নিয়মিত চিকিৎসা প্রক্রিয়ার অংশ বলে দাবি করেছেন পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. এটিএম রেজাউল করিম।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মামুনের হাঁটার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, করিডরে আরেকজনের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটছেন তিনি। অনেকে এটিকে ‘ফটোসেশন’ উল্লেখ করে সমালোচনা করেন। মামুনকে জোর করে সুস্থ দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিয়ার রহমান ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘কিছুক্ষণ আগে পার্কভিউ হাসপাতালে এলাম আহতদের দেখতে। আলহামদুলিল্লাহ, মামুন হাঁটছে, ছোট ছোট করে কথা বলছে। অপারেশনে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন তাকে হাঁটালেন। কিছুটা হলেও স্বস্তি বোধ করলাম।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্কভিউ হসপিটালের এমডি ডা. এটিএম রেজাউল করিম বলেন, ‘জটিল অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে বসানো বা হাঁটানো চিকিৎসকদের নিয়মিত রুটিন ওয়ার্ক। এতে রোগীর শারীরিক সক্ষমতা বোঝা যায়। এ সময় কেউ ছবি তুললে বা ফেসবুকে দিলে আমাদের কিছু করার নেই।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেকে বিষয়টিকে ঘুরিয়ে আমাদের ভিলেন বানানোর চেষ্টা করছেন। অথচ জটিল অস্ত্রোপচারের পর একজন রোগী হাঁটতে পারা চিকিৎসকদের জন্য বড় সফলতা। চবির ঘটনায় গুরুতর আহত মামুনকে সুস্থ করে তোলার জন্য আমাদের চিকিৎসকরা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। ফেসবুকের ছবি দিয়ে তো কাউকে সুস্থ বা অসুস্থ দাবি করা যায় না।

সমালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্য আতিয়ার রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২২ বছর শিক্ষকতা করেছি। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার নাড়ীর সম্পর্ক রয়েছে। গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন ডাক্তার এসে তার সঙ্গে কথা বলছিলেন। হাঁটানোর চেষ্টা করেছেন, হাত তুলতে বলেছেন—সে হাত তুলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দৃশ্যটা দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। পরে কেউ একজন সেই মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও আমাকে দিলে আমি ফেসবুকে শেয়ার করি। এতে সবাই তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন। এখানে তো সমালোচনার কিছু দেখছি না। যারা সমালোচনা করছেন তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই করছেন।’

গত ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন মামুন মিয়া। তার মাথায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। ওই রাতেই তার মাথায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাথার খুলির ১৩ টুকরো ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়।

গত বুধবার পর্যন্ত তিনি পার্কভিউ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। এরপর তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলে তার অবস্থা কিছুটা উন্নত হয়।