শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটকে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা এ ঘোষণা দেন।
সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে জিএস এবং সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে গত শনিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান এবং ছাপাখানা কর্মকর্তা রবিউল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকালে ‘মতিহারের সচেতন এলাকাবাসী’ ব্যানারে কাজলা ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সালাহউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে স্থানীয়রাই তাকে প্রতিহত করবে।
কাজলা কেডি ক্লাবের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ডলার সমাবেশে বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করতে চাই—এই ক্যাম্পাসে যা খুশি তা করার সুযোগ নেই। আমরা যদি এক না থাকি, তাহলে কী হয়, তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষিত করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল বাবু বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার কয়েক দিন কেটে গেলেও এখনো সেই ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরাই বিচার করে নেব। আমরা ঘুমন্ত বাঘ- জাগাবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যারা আছেন তারা দখলবাজ; আপনারা মানবিক হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কর্মচারী আলমগীর হোসেন এবং পরিচালনা করেন হায়দার আলী। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়। আজ মঙ্গলবার বিকেলেও বিনোদপুর বাজারে কর্মসূচি রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে স্থানীয়রা কেন জড়াচ্ছেন, তা আমি বুঝতে পারছি না।’
উল্লেখ্য, গত শনিবারের ঘটনার পর থেকে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন। এর ফলে ২৫ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা ছিল রাকসু নির্বাচনও পিছিয়ে যায়। নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ অক্টোবর।