ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চোলাই মদের কারখানার সন্ধান

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি- সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনের গ্রিনহাউস এলাকায় একটি ঝুপড়ি ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় মদ ও বন্যপ্রাণী শিকারের সরঞ্জামসহ সুমন চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে এসব আলামত জব্দ করে। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করে মামলা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রিনহাউসের ব্রিজের ঠিক উত্তর পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজ নেওয়া বখতিয়ার ফকিরের জমিতে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে বসবাস করছিলেন সুমন চাকমা। একটি ছোট বেড়ার ঘরকে তিনি বসতঘর হিসেবে ব্যবহার করতেন এবং ঘরের পেছনে তাঁত দিয়ে তৈরি কাঠামোয় গড়ে তুলেছিলেন চোলাই মদ তৈরির একটি কারখানা।

সম্প্রতি বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের পুকুরপাড়ে বহিরাগতদের সন্দেহজনক যাতায়াত এবং কিছু শিক্ষার্থীর নিয়মিত উপস্থিতি নজরে আসায় গোপনে অনুসন্ধান শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অনুসন্ধানে মদের ব্যবসা ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বন্যপ্রাণী শিকারের তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।

চবি সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানান, সোমবার রাতে প্রক্টর, নিরাপত্তা সুপারভাইজার নুরুদ্দীন ও মহিউদ্দিনসহ সাত-আটজনের একটি দল অভিযান চালিয়ে সুমন চাকমা ও তার সঙ্গে থাকা এক নারীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি জানান, ওই নারী তার স্ত্রী নন।

এ সময় একটি ড্রামে সদ্য প্রস্তুত ৩০ লিটারের বেশি চোলাই মদ, ৫ লিটারের একটি ডেক্সি, বোতলে ভরা আরও ৫ লিটার মদসহ বড় আকারের মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি মদ বিক্রির হিসাব সংক্রান্ত খাতা, বিভিন্ন উপকরণ ও অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে।

নুরুল হামিদ কানন আরও জানান, সুমন চাকমা বন্য শুকর, হরিণ, বন্য মুরগিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার করার কথাও স্বীকার করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শিকার করা মাংস বাইরে বিক্রি করতেন বলেও স্বীকারোক্তি দেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়মিত তার কাছ থেকে মদ কেনেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি লিজ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে অবৈধ ও অননুমোদিত ব্যবসা পরিচালনার দায়ে সংশ্লিষ্ট লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।