ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

সিলেটে এনসিপির ছয় নেতার পদত্যাগ

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম
এনসিপির লোগো। ছবি- সংগৃহীত

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নতুন কমিটি গঠনকে ঘিরে শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। কমিটি ঘোষণার মাত্র সাত দিনের মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন দলের ছয়জন নেতা। এদের মধ্যে কেউ কেউ ফেসবুকে পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ জমা দিয়েছেন দলের প্রধান সমন্বয়কারীর কাছে।

গত ১২ জুলাই এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গোয়াইনঘাট উপজেলা এনসিপির ২১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর একদিন পরই, ১৩ জুলাই সদস্য ফাহিম আহমদ এবং ১৪ জুলাই যুগ্ম সমন্বয়কারী নাদিম মাহমুদ ফেসবুকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। সর্বশেষ ২০ জুলাই রোববার আরও চার নেতা—যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ, সদস্য তরিকুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমদ ও কামরুল হাসান—পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধান সমন্বয়কারী হাফিজ মো. আব্দুল হাফিজের কাছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক নেতা জানান, পদত্যাগের পেছনে রয়েছে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ও প্রভাবশালীদের চাপ। যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলালের চাচাতো ভাই। অভিযোগ রয়েছে, তারই ধমকেই মারুফ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।

এ ছাড়া মারুফের সঙ্গে পদত্যাগকারী তরিকুল, কিবরিয়া ও কামরুল—তিনজনই একটি বিকাশ এজেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করেন। মারুফের মাধ্যমেই তারা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। পরে সবাই একসঙ্গে পদত্যাগ করেন। একজন সরাসরি জানিয়েছেন, চাকরির কারণে কমিটিতে কাজ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, ফাহিম আহমদ ও নাদিম মাহমুদ ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখালেও দলের অভ্যন্তরে ধারণা, কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় তারা অসন্তোষ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

গোয়াইনঘাট উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মো. আব্দুল হাফিজ ছয় নেতার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ফাহিম ও নাদিম কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় শুরুতে পদত্যাগ করেন। পরে আরও চার নেতা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রকে জানিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, এনসিপির এই অভ্যন্তরীণ সংকট গোয়াইনঘাট উপজেলায় দলটির কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, দল কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে সামনে এগোতে চায়।