প্রযুক্তির আশীর্বাদ না অভিশাপ? জানুন সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো-মন্দ দুই দিক।বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেটের কল্যাণে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারসহ নানা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের সঙ্গে সহজে যুক্ত থাকতে পারছি। তবে এই প্রযুক্তির যেমন অসংখ্য উপকারিতা আছে, তেমনি এর অপব্যবহার আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সমাজেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা
যোগাযোগ সহজ হয়েছে
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে খুব সহজে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা অনেক সহজ হয়েছে।
তথ্য ও শিক্ষার সহজলভ্যতা
ইউটিউব, ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে শিক্ষামূলক ভিডিও, টিউটোরিয়াল, অনলাইন কোর্স পাওয়া যায়, যা পড়াশোনা বা দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার
অনেকেই এখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইন বিজনেস করছেন। ফেসবুক পেইজ, গ্রুপ বা ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে পণ্য ও পরিষেবা সহজে প্রচার করা যায়।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক, মানবিক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা ছড়ানো সম্ভব হচ্ছে। দুর্যোগ বা জরুরি পরিস্থিতিতেও দ্রুত তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
বিনোদনের সহজ মাধ্যম
ভিডিও, ছবি, গান, মজার কন্টেন্টসহ নানা বিনোদনের সহজ ও তাৎক্ষণিক উৎস হলো সোশ্যাল মিডিয়া।
সোশ্যাল মিডিয়ার অপকারিতা
সময়ের অপচয়
অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার অনেক সময়ের অপচয় ঘটায়, যা পড়াশোনা বা কাজের ক্ষতি করে।
মানসিক চাপ ও হতাশা
নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা, নেতিবাচক মন্তব্য, সাইবার বুলিং অনেকের মধ্যে হতাশা, দুশ্চিন্তা ও আত্মবিশ্বাসের সংকট তৈরি করে।
ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানো
ভুয়া খবর, গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে সমাজে বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যা কখনও কখনও মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ঝুঁকি
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত ছবি বা তথ্য শেয়ার করলে তা হ্যাক বা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।
শিশু-কিশোরদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব
অতিরিক্ত সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটানো শিশু ও কিশোরদের পড়াশোনা, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
করণীয় ও সতর্কতা
নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা ঠিক নয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা ভিডিও শেয়ারে সতর্ক থাকতে হবে।
ভুল বা সন্দেহজনক তথ্য শেয়ার না করা উচিত।
শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর অভিভাবক হিসেবে নজরদারি করা জরুরি।
সময়ে সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি নেওয়া ভালো।
সোশ্যাল মিডিয়া যেমন আমাদের জীবনকে সহজ, তথ্যবহুল ও বিনোদনময় করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, পড়াশোনা, স্বাস্থ্য ও সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই প্রযুক্তিকে দোষ না দিয়ে, এর সঠিক ব্যবহার করাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনার মতামত লিখুন :