বয়স বাড়ার পরও অনেকের ত্বকে ব্রণের সমস্যা থেকেই যায়। কখনো তা হয় হরমোনের তারতম্য বা বংশগত কারণে, আবার অনেক সময় দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসও এ সমস্যার জন্য দায়ী।
ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কিছু খাবার শরীরের হরমোন ও ত্বকের অভ্যন্তরীণ উপাদানে প্রভাব ফেলে, যা ব্রণের সৃষ্টি করে বা তা আরও বাড়িয়ে তোলে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার স্কটসডেল পেডিয়াট্রিক ডার্মাটোলজি অ্যান্ড কসমেটিক সার্জারির পরিচালক ডা. করণ লাল এবং টেক্সাসের ওয়েস্টলেক ডার্মাটোলজির চিকিৎসক ডা. এমিলি উড অনলাইন সাময়িকী ‘ইট দিস, নট দ্যাট’-এ এক প্রতিবেদনে এমন কিছু খাবারের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলো নিয়মিত খেলে প্রাপ্তবয়স্কদের ব্রণের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ওট দুধ
সাধারণ দুধের বিকল্প হিসেবে অনেকেই ওট দুধ বেছে নেন। তবে এতে উচ্চমাত্রার শর্করা থাকায় তা ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায়, যা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে ও ত্বকে তৈলাক্ততা বৃদ্ধি করে—ফলে ব্রণের সম্ভাবনা বাড়ে।
ছেঁকে তৈরি প্রোটিন (প্রোটিন পাউডার)
বডি বিল্ডিং বা ডায়েটের জন্য ব্যবহৃত এই প্রোটিনে থাকে ইনসুলিন সদৃশ বৃদ্ধিকারী উপাদান আইজিএফ-১, যা অ্যান্ড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন হরমোন সক্রিয় করে। এতে ত্বকে অতিরিক্ত কোষ উৎপাদন হয়, রন্ধ্র বন্ধ হয় এবং ব্রণ দেখা দেয়।
উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার
সাদা ভাত, সাদা পাউরুটি, বিস্কুট, মিষ্টি, কোমল পানীয় প্রভৃতি খাবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়ায়। এতে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয় ও ত্বকে তৈলাক্ততা বেড়ে ব্রণ দেখা দিতে পারে।
বিশেষ করে পরিশোধিত চিনি ব্রণ সৃষ্টিকারী জীবাণু ও ছত্রাকের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২ সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট
শরীরের শক্তি ও রক্ত তৈরিতে উপকারি হলেও এই ভিটামিনগুলো ত্বকের জীবাণু ভারসাম্যে পরিবর্তন ঘটিয়ে ব্রণের কারণ হতে পারে। ‘পি. অ্যাকনেস’ নামক জীবাণুর আচরণেও এই ভিটামিনের প্রভাব পড়ে।
অতিরিক্ত আয়োডিন
সামুদ্রিক শৈবাল বা ‘কেল্প’ জাতীয় সাপ্লিমেন্ট, স্মুদি বা স্কিন-ড্রিংকে থাকা উচ্চমাত্রার আয়োডিন প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ত্বকে তৈলাক্ততা বাড়ায় বলে ধারণা করা হয়।
স্কিম দুধ (চর্বি কমানো দুধ)
চর্বিহীন এই দুধে থাকা ইনসুলিন বৃদ্ধিকারী উপাদান, হরমোন এবং নির্দিষ্ট প্রোটিন ব্রণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্কিম দুধ গ্রহণকারীদের ব্রণের প্রবণতা তুলনামূলক বেশি।
সয়া প্রোটিন
নিরামিষাশীদের মাঝে জনপ্রিয় হলেও অতিরিক্ত সয়া প্রোটিন গ্রহণে কারও কারো ত্বকে ব্রণ দেখা দিতে পারে। তাই একেবারে বাদ না দিয়ে পরিমিত খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ত্বকের সমস্যা থাকলে খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা জরুরি। শর্করাযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে ফলমূল, পানি ও প্রাকৃতিক উপাদান গ্রহণ করলে ত্বক থাকবে সুস্থ ও সতেজ।
আপনার মতামত লিখুন :