বর্তমান আধুনিক জীবনে নারীরা তাদের মাতৃত্বকালেও ফ্যাশন সচেতন থাকতে চান। আগে গর্ভাবস্থায় নারীদের পোশাক নিয়ে খুব একটা চিন্তাভাবনা করা হতো না; ঢিলাঢালা পোশাকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল মাতৃত্বকালীন ফ্যাশন। কিন্তু সময় বদলেছে, ফ্যাশনে এসেছে বৈচিত্র্য ও আধুনিকতা, এবং নারীরাও এখন নিজেকে উপস্থাপন করতে আগ্রহী এই বিশেষ সময়ে। ফ্যাশনের পাশাপাশি আরাম যেন ঠিক থাকে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে শফিকা এবং তাহমিনা বৃষ্টির অভিজ্ঞতা থেকে উঠে এসেছে কিছু চিত্র, যা মাতৃত্বকালীন ফ্যাশনের প্রতি বর্তমান সময়ে নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগে চাকরিরত শফিকা মনে করেন, মাতৃত্বকালে নারীদের এমন পোশাক পরা উচিত যা আরামদায়ক। তবে তিনি বলেন, ‘যাদের নিয়মিত অফিস করতে হয় তাদের জন্য আরাম এবং ফ্যাশন দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হয়।’ শফিকার মতে, আগে একটা সময় ছিল যখন গর্ভাবস্থায় শুধু ঢিলাঢালা পোশাক পড়াই যথেষ্ট মনে করা হতো, কিন্তু এখন কর্মজীবী নারীদের জন্য আরাম ও স্টাইলের সমন্বয় আরও জরুরি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, অফিসে যাওয়ার সময় স্টাইলিশ এবং আড়ম্বরপূর্ণ পোশাকের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে পারেন নারীরা, যা আগে তেমনভাবে ভাবা হয়নি।
অন্যদিকে, সংবাদকর্মী তাহমিনা বৃষ্টি তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানান যে, গর্ভাবস্থায় তিনি সাধারণত কাফতান, গাউন, টি-শার্ট এবং লং কামিজ পরতেন। এসব পোশাকের মধ্যে আরাম আর তাপমাত্রার ভারসাম্য থাকায় তার এসব পোশাকই বেশি পছন্দের ছিল। তবে তাহমিনা এও উল্লেখ করেন যে, কিছু বছর আগেও ফ্যাশনেবল ম্যাটার্নিটি ড্রেস খুব সহজলভ্য ছিল না। তখন অনেকেই ম্যাটার্নিটি পোশাক কিনতে চাইলেও তেমন অপশন পেতেন না, এবং বাহ্যিকভাবে স্টাইলিশ হলেও আরামদায়ক পোশাক পাওয়া ছিল দুরূহ। তবে বর্তমানে অনলাইন ব্যবসার প্রসারের ফলে নারীরা সহজেই নিজেদের পছন্দের পোশাক বেছে নিতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘অনলাইনে এখন বিভিন্ন ধরনের স্টাইলিশ এবং আরামদায়ক ম্যাটার্নিটি পোশাক সহজেই পাওয়া যায়, যা নারীদের ফ্যাশন সচেতনভাবে মাতৃত্বকালীন সময়টুকু উপভোগ করার সুযোগ দিচ্ছে।’ শফিকা এবং তাহমিনা দুজনেই বলেন, অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, লোকাল মার্কেট এবং আড়ং ও আড়ং তাগার মতো ব্র্যান্ডগুলো ম্যাটার্নিটি পোশাক সহজলভ্য করেছে। এর ফলে নারী বা তার পরিবার যেকোনো সময় পোশাক বেছে নিতে পারেন, যা বিশেষভাবে সহায়ক। বর্তমান সময়ে অনেক ব্র্যান্ড তাদের কালেকশনে ম্যাটার্নিটি ফ্যাশনের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের পাশাপাশি আরামের ওপরও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
তাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলা হলেও তারা দুজনেই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন সময়ে পরিবারের বিশেষত পুরুষ সদস্যদের কিছুটা সচেতন থাকা দরকার।’ তারা মনে করেন, নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর মাতৃত্বকালীন সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত নির্ভর করে। তাই পরিবারের সদস্যদের উচিত নারীর ফ্যাশন ও আরামের দিকে নজর রাখা। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা যদি একটু সচেতন হন এবং স্ত্রীর জন্য আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করতে সাহায্য করেন, তবে নারীর জন্য গর্ভাবস্থার সময়টা আরও সহজ ও আনন্দময় হয়ে উঠবে।
মোটকথা, মাতৃত্বকালীন ফ্যাশনের ক্ষেত্রে আরাম এবং স্টাইলের সমন্বয় দিন দিন আবশ্যিক হয়ে উঠছে। কর্মক্ষেত্রে বা বাইরে কিংবা যেকোনো অনুষ্ঠানে নারী যেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে তুলে ধরতে পারেন, সেটি তার পোশাকের মধ্যেই প্রতিফলিত হওয়া উচিত। পাশাপাশি, এই সময় নারীর মানসিক সুস্থতা ও স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে পরিবারের খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সদস্যরা যদি নারীর ফ্যাশন সচেতনতা ও শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি যত্নবান হন, তবে মাতৃত্বকালীন এই বিশেষ সময়টুকু হয়ে উঠবে আরও সুন্দর এবং আনন্দময়।
 

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন