শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

এক গ্লাস ডাবের পানিতে লুকিয়ে ৭টি উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

এক গ্লাস ডাবের পানিতে লুকিয়ে ৭টি উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকালে বা ক্লান্তির সময়ে একটি ঠান্ডা ডাব যেন প্রাণে সঞ্জীবনী এনে দেয়। সরাসরি নারকেল বা ডাব থেকে সংগৃহীত এই তরল শুধু পিপাসা নিবারণ করে না, বরং আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিও জোগায়।

ডাবের পানি একদিকে যেমন হালকা, তেমনি এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক মুক্ত। তবে অনেকেই শুধু উপকারিতা জানেন, এর কিছু সীমাবদ্ধতা বা অপকারিতা সম্পর্কে অবগত নন।

এক নজরে দেখে নিন ডাবের পানির গুণাগুণ, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর ব্যবহার, এবং সতর্কতা।

ডাবের পানির পুষ্টিগুণ

একটি মাঝারি আকারের ডাবে সাধারণত ২০০-২৫০ মি.লি. পানি থাকে। এই পানীয়তে থাকে প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ), ইলেক্ট্রোলাইট (পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম), প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

এছাড়াও, এতে থাকে ভিটামিন সি, কিছু বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন এবং সাইটোকাইনস, যা কোষের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ডাবের পানির উপকারিতা

১. পানিশূন্যতা দূর করে দ্রুত

ডাবের পানি হলো এক প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ তরল। যা ডায়রিয়া, বমি বা অতিরিক্ত ঘাম ঝরার পর দ্রুত শরীরের জলীয় ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণে কার্যকর। এতে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের ভেতর হাইড্রেশন ফিরিয়ে আনে।

২. হজম শক্তি বাড়ায়

যাদের পেটে গ্যাস, অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা হালকা হজম সমস্যার প্রবণতা আছে, ডাবের পানি তাদের জন্য উপকারী। এটি পাকস্থলীর অ্যাসিড ব্যালান্স বজায় রাখে।

৩. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

পটাশিয়াম একটি প্রাকৃতিক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক। ডাবের পানিতে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তনালীর চাপ হ্রাস করে এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

৪. ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক

ডাবের পানিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এটি ব্রণ প্রতিরোধ, চুলের গোড়া শক্ত করা এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

ডাবের পানিতে ক্যালোরি খুবই কম (প্রতি ১০০ মি.লি. -তে প্রায় ১৯ ক্যালোরি) থাকে। এছাড়া এতে ফ্যাট নেই বললেই চলে। ফলে যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট বিকল্প।

৬. কিডনির যত্নে কার্যকর

ডাবের পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন নির্গমনে সহায়ক। এটি প্রস্রাব বৃদ্ধি করে এবং কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

৭. গর্ভবতীদের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর

ডাবের পানি হালকা ও সহজপাচ্য। গর্ভাবস্থায় এটি মর্নিং সিকনেস হ্রাস করে, হজমে সাহায্য করে এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখে। তবে প্রতিদিনের মাত্রা অবশ্যই সীমিত রাখতে হবে।

ডাবের পানির অপকারিতা

প্রাকৃতিক ও নিরাপদ হলেও ডাবের পানি সবার জন্য সব পরিস্থিতিতে উপযুক্ত নয়। নিচে কিছু সতর্কতার বিষয় তুলে ধরা হলো:

১. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ

ডাবের পানি প্রাকৃতিক হলেও এতে চিনি রয়েছে। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের কারণে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের চিকিৎসকের পরামর্শে ও সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।

২. কিডনি রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে অতিরিক্ত পটাশিয়াম

কিডনি যদি স্বাভাবিকভাবে রক্ত থেকে অতিরিক্ত পটাশিয়াম অপসারণ করতে না পারে। তাই ডাবের পানিতে থাকা উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম কিডনি রোগিদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকলে সতর্ক থাকা জরুরি।

৩. পেট খারাপ বা ডায়রিয়া হতে পারে অতিরিক্ত খেলে

ডাবের পানি খুব দ্রুত হজম হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কারো কারো হালকা ডায়রিয়া বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।

৪. ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি

গরমের দিনে ঠান্ডা ডাবের পানি বেশ উপকারী হলেও, একটানা বা খুব ঠান্ডা অবস্থায় পান করলে কারো কারো সর্দি, কাশি বা গলা ব্যথা হতে পারে।

দৈনিক গ্রহণ মাত্রা

সাধারণ সুস্থ মানুষ প্রতিদিন ১টি ডাবের পানি (২০০-২৫০ মি.লি.) খেতে পারেন। তবে যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা হজমের দুর্বলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে সীমিত মাত্রায় গ্রহণ এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

ডাবের পানি প্রকৃতির এক সহজ, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পানীয়। এতে যেমন রয়েছে বহু উপকারী পুষ্টি উপাদান, তেমনি কিছু সতর্কতা মেনে চললে এটি হতে পারে আমাদের প্রতিদিনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গ্রীষ্মকাল হোক বা শরৎ, শিশুরা হোক বা বয়স্ক — সবার জন্যই এটি উপযোগী, যদি গ্রহণ করা হয় সঠিক মাত্রায় ও সচেতনভাবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!