বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

 গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

কমলা। ছবি: সংগৃহীত

কমলা। ছবি: সংগৃহীত

অনেকেরই প্রিয় ফলের তালিকায় কমলা অন্যতম। কমলা আমাদের প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। একই সঙ্গে এ ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান। এ পুষ্টি উপাদানসমূহ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ছোটবড় নানা ব্যাধি ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়া,কমলায় প্রচুর আয়রন থাকে, যা গর্ভাবস্থার হিমোগ্লোবিনের সংকট সামাল দিয়ে অ্যানিমিয়া রোধ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুপারফুড হিসেবে বিবেচিত কমলা। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ভাইরালের মতো জাদুকরী গুণ। এ ছাড়াও কমলায় বেশ কিছু প্রয়োজনীয় খনিজ এবং ভিটামিন রয়েছে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।

কমলার পুষ্টিগুণ:

প্রতি ১০০ গ্রাম কমলায় থাকে (আনুমানিক):
ক্যালরি: ৪৭
পানি: ৮৬%
কার্বোহাইড্রেট: ১১.৮ গ্রাম
প্রোটিন: ০.৯ গ্রাম
ফ্যাট: ০.১ গ্রাম
ফাইবার: ২.৪ গ্রাম
ভিটামিন সি: দৈনিক প্রয়োজনের ৮৯% পর্যন্ত

ভিটামিন সি-এর উৎকৃষ্ট উৎস: কমলা ভিটামিন সি-তে ভরপুর, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক ভালো রাখে এবং সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়তা করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: কমলায় থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এগুলো দেহে ফ্রি র‍্যাডিকেল কমিয়ে কোষের ক্ষয়রোধ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কমলায় প্রাকৃতিক চিনির মাত্রা কম থাকে এবং এতে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর: কমলায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এটি কোলেস্টেরল কমাতেও সহায়তা করতে পারে।

হজমশক্তি বাড়ায়: কমলায় থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের যত্নে উপকারি: ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে, যা ত্বককে কোমল ও টানটান রাখে। চুল পড়া রোধ করতেও এটি কার্যকর।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত হওয়ায় কমলা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, ফলে অপ্রয়োজনীয় খাওয়াও কমে।

কমলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনই শরীরের নানা উপকারে আসে। 

কমলা খাওয়ার উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশি ও সাধারণ সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করে: কমলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনয়েড ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়: ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে, যা ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল রাখে। নিয়মিত কমলা খেলে ব্রণ ও বলিরেখা কমে।

ওজন কমাতে সহায়ক: কমলায় ফাইবার বেশি এবং ক্যালরি কম, তাই এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা কমায়। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

হজম শক্তি বাড়ায়: কমলার ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কমলায় থাকা প্রাকৃতিক চিনির মাত্রা কম এবং এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে: কমলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যালসমূহ কোষের ক্ষয় রোধ করে, যা কিছু প্রকার ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক: কমলা আয়রন সরাসরি না থাকলেও ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে দেয়, যা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা

ফাইবার আর ফলিক অ্যাসিডের ভালো উৎস হলো কমলা। ভ্রূণের মস্তিষ্ক আর মেরুদণ্ড গঠনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে কমলায়। গর্ভকালে প্রতিদিন অন্তত একটি কমলা খেলে বাচ্চার অ্যালার্জি ও অ্যাজমা হওয়ার শঙ্কা কমে যায়। কমলা প্রচুর আয়রন থাকে, যা গর্ভাবস্থার হিমোগ্লোবিনের সংকট সামাল দিয়ে অ্যানিমিয়া রোধ করে।

গর্ভাবস্থায় দিনে কয়টি কমলা খাওয়া উচিত?

যেমনটা হয়, কিছু ডাক্তার পরামর্শ দেন যে গর্ভবতী মহিলাদের সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩টির বেশি নিয়মিত আকারের কমলা খাওয়া উচিত নয়। মনে রাখবেন যে কমলা প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিডিক, তাই পেটের অ্যাসিডিটির ঝুঁকিতে থাকা মহিলাদের বুক জ্বালাপোড়া এবং পেট ফাঁপা এড়াতে এই ধরণের ফল খাওয়া সীমিত করা উচিত।

কমলা খাওয়ার অপকারিতা

অতিরিক্ত অ্যাসিডিক হওয়ায় গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: কমলায় সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে অম্বল, গ্যাস্ট্রিক বা বুকজ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।

দাঁতের এনামেল ক্ষয়: কমলার অ্যাসিড দাঁতের উপরের আবরণ (এনামেল) ক্ষয় করতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে দাঁত সংবেদনশীল বা হলুদও হয়ে যেতে পারে।

ডায়রিয়ার ঝুঁকি: একসাথে অনেক কমলা খাওয়া হলে এতে থাকা ফাইবার হজমে সমস্যা তৈরি করে এবং পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

রক্তে চিনির মাত্রা বাড়তে পারে: যদিও প্রাকৃতিক চিনি, তবু অতিরিক্ত কমলা খেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে।

কিডনির রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে: কমলায় পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি। যাদের কিডনি ঠিকমতো কাজ করে না, তাদের জন্য অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীরে জমে গিয়ে ক্ষতিকর হতে পারে।

অ্যালার্জির সমস্যা (কিছু ক্ষেত্রে): খুব কম হলেও কারও কারও শরীরে কমলার প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

কমলা খাওয়ার সঠিক সময় জানা থাকলে আপনি এর পুষ্টিগুণ সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবেন এবং অপকারিতা এড়িয়ে চলতে পারবেন।

কমলা খাওয়ার সঠিক সময়

সকালে খালি পেটে: কমলার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সকালে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। তবে একেবারে খালি পেটে অ্যাসিডিক ফল খেলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে, তাই অল্প কিছু খাওয়ার পর কমলা খাওয়া উত্তম।

বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে: দুপুরের খাবারের পর হালকা ক্ষুধা লাগলে কমলা খেতে পারেন। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ক্লান্তি দূর করে।

ওয়ার্কআউটের আগে বা পরে: কমলার প্রাকৃতিক চিনি ও ভিটামিনস শরীরে এনার্জি দেয়, তাই ব্যায়ামের আগে বা পরে খাওয়া উপকারী।

খাবারের ১ ঘণ্টা আগে বা পরে: খাবারের সঙ্গে একসাথে কমলা খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে বা পরে খেলে পুষ্টিগুণ ঠিকভাবে শোষিত হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!