বর্তমান ব্যস্ত জীবনে রাতে দেরি করে ঘুমানো যেন এক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা কাজের চাপে অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন। ফলে সকালটা তাদের কাছে হয় অলসতা আর ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে শুরু করা একটা ঝিম ধরা সময়।
অথচ আমাদের পূর্বপুরুষরা দিনের শুরু করতেন ভোরবেলা, সূর্য ওঠার আগেই। প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার এই অভ্যাস তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার অন্যতম রহস্য ছিল।
সকালে ঘুম থেকে ওঠা শুধু একটা ভালো অভ্যাস নয়, বরং এটি শরীর, মন এবং জীবনযাপনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভোরে ওঠেন, তারা কাজের ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগী, মানসিকভাবে স্থির এবং স্বাস্থ্যবান হন।
এ ছাড়া দিনের শুরুটা যদি সতেজ ও পরিকল্পিত হয়, তাহলে সারাদিনই অনেক বেশি কার্যকরভাবে সময় ব্যবহার করা যায়। সকালবেলার নির্মল বাতাস, পাখির ডাক, সূর্যালোক আর সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সময়টুকু একজন মানুষকে আবেগিক ও আত্মিকভাবে দৃঢ় করে তোলে।
আসুন, জেনে নিই সকালে ঘুম থেকে ওঠার কী কী উপকারিতা রয়েছে এবং কেন এখনই এই অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
নাস্তা: দিনের কাজ শুরুর জন্য সকালের নাস্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকালে উঠে একটা জম্পেশ নাস্তা করা অতি জরুরি কাজের মধ্যে একটি। কারণ সকালের স্বাস্থ্যকর নাস্তা পুষ্টি ও ভিটামিন দেয় আমাদের। তাই যেকোনো কাজে ভালো পারফরমেন্সের সঙ্গে একঘেয়েমি দূর করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া অধিক শক্তিসহ দেয় কাজে মনোযোগ। তাই ভালো একটা নাস্তার জন্য সকালে উঠুন।
ব্যায়াম: সকালে ঘুম থেকে ওঠার আরেকটি সুফল বয়ে আনবে ব্যায়াম। সেই সঙ্গে রাতের ঘুমও গভীর করবে ব্যায়াম। যারা সকালে উঠে ব্যায়াম করেন তারা সারাদিন ঝরঝরে থাকেন এবং রাতেও গভীর ঘুম উপভোগ করেন।
আরামে কাজ সারা: সময়মতো উঠে পড়লে আরামে কাজগুলো শেষ করতে পারবেন। অফিসে যাওয়ার সময়ও থাকবে যথেষ্ট। ফলে সেখানে সময়মতো পৌঁছতেও পেরেশানি হতে হবে না আপনাকে।
আরো উৎপাদনশীল: সকালে ঘুম থেকে উঠলে আপনার কাজের গতি বেড়ে যাবে। আপনি হয়ে উঠবেন আরো উৎপাদনশীল। তাই দুপুরের লাঞ্চের সময় দেখবেন আপনি যথেষ্ট কাজ সেরে ফেলেছেন এবং তা দেখেই আপনার উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যাবে। তাই ঘুম থেকে সকালে উঠুন।
পড়াশোনা: ভোরে ঘুম থেকে উঠলে আপনি ফ্রেস মনে পড়াশোনায় সময় দিতে পারবেন। এতে কোনো কিছু অন্য সময়ের থেকে তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়। তা ছাড়া, ছোট ভাই-বোনেরা আপনার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাবে না।
বিশুদ্ধ বায়ু: সারাদিন মানুষের চলাফেরা ও কলকারখানা খোলা থাকে বলে দিনে বাতাসে প্রচুর রোগ-জীবানু থাকে। কিন্তু ভোরের বায়ু থাকে বিশুদ্ধ। ফলে আপনি নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় বিশুদ্ধ বায়ু শরীরের ভেতরে নিতে পারছেন।